পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রেখে দিয়েছিল। কারোর অভিযোগ না থাকায় (সোমবার) সকালে লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুপুরে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। স্ত্রীর মৃত্যুর কথা বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত হয়ে মো. রানা বলেন, ওতো মারা গিয়ে বেঁচে গেল। এখন আমার আর আমার অসুস্থ সন্তানটার কী হবে? কে আমাদের আগলে রাখবে? কে আমার পাশে দাঁড়াবে? কার সঙ্গে আমি সুখ-দুঃখের আলাপ করবো? আমার সংসারটা ভেসে গেল, সব শেষ হয়ে গেল। আমি এখন কাকে নিয়ে বাঁচবো?
রানা-আফরোজা যেই বাসায় ভাড়া থাকতেন ওই বাসার মালিকের মেয়ে মলি আক্তার বলেন, নিহত আফরোজাদের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার কুরুকচর গ্রামে। গত দুই বছর ধরে আমাদের বাড়ির নিচতলার একটি সিঙ্গেল রুমের ফ্লাটে মো. রানা তার স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ভাড়া আছেন। এমনিতে তাদের তেমন কোনো ঝামেলা কখনো দেখিনি। তবে তাদের ছেলেটা অনেক অসুস্থ। ওই ছেলের খরচ জোগাড় করতে মা আফরোজা বাইরে গিয়ে চাকরি করতে না পারায় বাসায়ই বাচ্চাদের টিউশন পড়াতেন। ছেলেকে নিয়েই সব সময় থাকতেন তিনি। রোববার হঠাৎ শুনি তিনি বিষ খেয়েছেন, হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। পরে বিকালে শুনি মারা গেছেন। বর্তমানে ছেলেটা আমাদের পাশেই তার নানীর বাসায় রয়েছে। আফরোজার মায়ের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, মেয়ের মৃত্যুর শোকে যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন মা। বার বার কেঁদে কেঁদে বিলাপ করছেন।
এ বিষয়ে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে ও ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা গেছে, গৃহবধূর স্বামী স্বল্পআয়ের সেল্সম্যানের চাকরি করেন। তাদের একমাত্র ছেলের কিডনির সমস্যা রয়েছে। শিশুটির চিকিৎসা করাতেই পরিবারটি হিমশিম খাচ্ছিল। এ কারণে হতাশা থেকে গৃহবধূ আফরোজা বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। তবে ঘটনাটি আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।