সৈয়দ শামছুল হুদা:
৫ আগষ্ট ২০২৪ নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, অতীতের দেখানো পথে আর খুব সহসা বাংলাদেশের রাজনীতির পথচলা শুরু হবে না। ইনশাআল্লাহ এক নতুন বাংলাদেশ দেখা যাবে খুব শীঘ্রই। বর্তমান সরকারকে যতটা দুর্বল মনে করা হচ্ছে, খুব তাড়াতাড়িই সেই সন্দেহও দূর হয়ে যাবে। আমরা এক নতুন রাজনীতি এখন দেখতে পাবো ইনশাআল্লাহ। সেই পথচলায় নেতৃত্ব দিবে তারুন্যনির্ভর সংগ্রামী ছাত্র সমাজ।
কোটা বিরোধী আন্দোলনে ইচ্ছায় হোক/ অনিচ্ছায় হোক এদেশের তরুন আলেম সমাজ এবং মেধাবী ছাত্ররা জড়িয়ে গেছে। তাদেরও তাজা রক্ত রাজপথে ঝড়েছে। একের পর এক নতুন ধারার কর্মযজ্ঞে তাদের দেখা মিলছে। সেখানে মাদ্রাসার আলেম এবং ছাত্র সমাজ জড়িয়ে গেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের পর ট্রাফিক সিগন্যালে কাজ করা থেকে শুরু করে- উন্নতমানের গ্রাফিতি আঁকা, ক্লিন বাংলাদেশ গঠনে সম্পৃক্ত থাকা, উগ্র মিথ্যা প্রচারণা প্রতিরোধকল্পে রাত জেগে হি ন্দু ভাইদের ম ন্দি র পাহারা দেওয়া ইত্যাদি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে।
এসব কারণেই আমি তরুন আলেম এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের আজ একটি আহ্বান রাখতে চাই। তোমরা আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে মিশন শুরু হতে যাচ্ছে, তাতে তোমাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কোনো দ্বিধা/ সংশয় ছাড়াই বর্তমান সমন্বয়ক এবং সহ সমন্বয়কদের সাথে গভীর সখ্যতা গড়ে তোলো। কোনো বড় হুজুরের দিকে তাকিয়ে আর লাভ নেই। আগামীতে কিংস পার্টি হোক আর যেভাবেই ছাত্ররা আসুক, সেখানে আমি তোমাদের দেখতে চাই। তোমরা এখনই পথ করে নাও। আমাদের পরিচিত ও প্রচলিত ইসলামী ধারার রাজনীতিতে তোমাদের কোনোই ভবিষ্যত না্ই। মাদ্রাসার চার দেওয়ালের ভেতরের সুনির্দিষ্ট চাকরী, কিছু মাহফিল করে পয়সা কামানোর স্বপ্ন না দেখে সরাসরি রাষ্ট্রের মালিক হতে চেষ্টা কর।
প্রিয় তরুন আলেম ও মেধাবী শিক্ষার্থীবৃন্দ!
আমি খুব হতাশার দৃষ্টিতে লক্ষ্য করছি যে, আমাদের গতানুগতিক ধারার ইসলামী দলগুলো অনেক নীতিকথা বললেও- বাস্তবে এর প্রতিফলন ঘটানোর কোনো সুযোগ নেই। দ্বিতীয় স্বাধীনতা উত্তর যে রাজনীতি শুরু হতে যাচ্ছে, তার সাথে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো তালমিলিয়ে চলতে সক্ষম হবে না। আমাদের রাজনীতি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক ও বড়হুজুর কেন্দ্রিক। এ দিয়ে তোমরা কোনোদিন রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ পাবে না। বর্তমান সমন্বয়কদের সাথে তাল মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে নিজেদের অধিকার আদায় করে নাও। তোমরাই রাষ্ট্রের কর্ণধার হযে যাও। এটা একটি চলমান কঠিন সংস্কার প্রক্রিয়া। এখানে অলরেডি তোমরা ঢুকে গেছো। তোমাদের সমবয়সী বন্ধুরাই আগামি দিনে রাষ্ট্র চালাবে। বুড়োদের আর খুব শীঘ্রই সুযোগ দেওয়া হবে না।
ওদের সাথে তাল মিলিয়ে তোমাদের কাজকে নতুন প্রজন্মের কর্ণধাররা স্বীকৃতি দিচ্ছে। টকশোতে তারা প্রশ্নকর্তাদের বাধ্য করছে- মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের স্বীকৃতির কথা প্রচার করতে। স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটির সাথে তোমাদের এতদিনে দূরত্বের যে অদৃশ্য যে দেওয়াল ছিল সেটা এখন অনেকটাই ভেঙ্গে গেছে। সরকারীভাবে শয়তানি চক্র এতদিন মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের কাউকেই কোনো পাত্তা দিতো না। এই চক্রের বিদায় হয়েছে। ভবিষ্যতে সেটা থাকবে না ইনশাআল্লাহ। বর্তমান সরকার আইনের শাসন নিশ্চিত করবে এটা আশা করা যায়। সুতরাং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তোমরা জড়িত থেকেও কেন বৈষম্যের পথেই হাঁটবে। রাষ্ট্র পরিচালনার অধিকার তোমাদেরও আছে। চিরচেনা গন্ডী থেকে বের হয়ে আসো। জেনারেলদের সাথে তোমরাও রাষ্ট্রের মালিক- এ স্বপ্ন দেখা শুরু করো। রাষ্ট্রকে তোমাদেরও কিছু দেওয়ার যোগ্যতা আছে সেটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে। আর পিছন ফিরে তাকিও না।
তোমাদের জন্য শুভ কামনা।
18.08.2024