আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকাকে নূহ নবীর নৌকা হিসেবে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আমাদের মার্কা নৌকা। এই নৌকা নূহ নবীর নৌকা। এই নৌকায় কিন্তু মানবজাতিকে রক্ষা করেছিলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। এই নৌকায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে উন্নয়নের জন্য নৌকার প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিপুল ব্যবধানে জয়যুক্ত করুন। নৌকা যখনই ক্ষমতায় এসেছে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। গতকাল সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে নির্বাচনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে আমেরিকা আমাদেরকে ক্ষমতায় আসতে দিলো না। কেন দিলো না? কারণ- বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক গ্যাস ওই আমেরিকা প্রস্তাব করল গ্যাস বিক্রি করতে হবে। আমেরিকার কোম্পানি এখানে গ্যাস উত্তোলন করে। আমি বলেছিলাম, আমি গ্যাস বেচবো না। এই গ্যাস আমাদের জনগণের। এই গ্যাস জনগণের কল্যাণে ব্যবহার হবে। জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করে যদি ৫০ বছরের রিজার্ভ রেখে অতিরিক্ত থাকে তাহলে বেচবো। তারা খুব নাখোশ হলেন। সিদ্ধান্ত নিলেন আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। তা ছাড়া আমাদের দেশেরও কিছু লোক ছিল তাদের সমর্থনে।
দীর্ঘ ৫ বছর পর সিলেটের মাঠিতে পা রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেট থেকে শুরু করলেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দলীয় প্রচারণা। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে কখনো দৃড়চেতা, কখনো নির্বাচন বিরোধীদের কঠিন হুঁশিয়ারী, কখনো উন্নয়নযজ্ঞের বর্ণনা, কখনো আগামীর প্রতিশ্রুতি কখনো বা আবেগ আপ্লুত হয়ে প্রায় ৩৫ মিনিট বক্তব্য প্রদান করেন সমাবেশে জমায়েত সিলেটবাসীর উদ্দেশে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এলো বিএনপি-জামায়াত জোট। যে বিএনপি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জনগণের ভোট চুরি করেছিল। ভোট চুরির অপরাধে এ দেশের মানুষ আন্দোলন করে ওই খালেদা জিয়াকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। সেই ক্ষমতাচ্যুত, ভোটচোর, জনগণের সম্পদচোর বিএনপিকে ক্ষমতায় বসালো ভোট কারচুপির মাধ্যমে। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। সে ক্ষমতায় গেলে গ্যাস বেচবে। সেজন্য তার পিঠে বাহবা দিয়ে ক্ষমতায় বসালো। তার রেজাল্ট কী ? দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, দুঃশাসন। দেশে ঘটা সব ধরনের নাশকতায় বিএনপির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি বাণিজ্য করেই ধ্বংস করেছে নির্বাচন। একজন লন্ডনে বসে মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে। আরেকজন গুলশানে বসে মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে। আবার পল্টন থেকেও আরেকবার বিক্রি করেছে। তারা এভাবে নির্বাচনকে বাণিজ্যে পরিণত করে ধ্বংস করেছে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখন দেশের মানুষের উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করেছে মানুষকে অভাবমুক্ত করছে তখন ক্ষমতার লোভে একটি দল আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারছে। লন্ডনে বসে একটি কুলাঙ্গার আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দিচ্ছে আর এখানে একটি মহল তা বাস্তবায়ন করছে। এদের প্রতিহত করতে হবে। আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যারা আগুন দেয় তাদের মনে রাখা উচিত আগুন নিয়ে খেললে ওই আগুনেই হাত পুড়বে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আল্লাহ জন বুঝে ধন দেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে যেসব স্থানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্যাস পায়নি, আওয়ামী লীগের আমলে সেসব স্থানেই গ্যাসের সঙ্গে তেলও পাওয়া গেছে। বিএনপির আমলে মিললে এসব তারা লুটেপুটে খেতো, কিন্তু এসব সম্পদ জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গ্রামকে শহরে রূপান্তর করেছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। সিলেটসহ ২১টি জেলাকে ভূমি ও গৃহহীন মুক্ত করেছি। সিলেটের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমরা ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। সুরমা-কুশিয়ারা খনন কাজ শুরু হয়েছে। আগামীতে আরো বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা আছে। সিলেট বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিমানবন্দর চৌকিদেখী পর্যন্ত রাস্তা ৪ লেন করা হচ্ছে।
সারাদেশের মানুষের জন্য সরকারের গৃহিত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় নেয়া কর্মসূচিগুলোর বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে আমরা কাজ করছি। পাশাপাশি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যাক্তাদের ভাতা দিচ্ছি। এসব কর্মসূচির আওতায় আগামীতে আরো বাড়ানো হবে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে বিদেশ যাওয়া যাবে। এমনকি বিদেশ ফেরতরা এই ব্যাংক থেকে লোন নিয়েও ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারবেন। তিনি আরো বলেন, স্মার্ট দেশ, স্মার্ট পিপল এবং স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তুলতে হলে আবারো নৌকায় সবাই ভোট দিন।
বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিন। সিলেটে যাদের নৌকা প্রতীক দিয়েছি, তাদের বিজয়ী করুন। শেখ হাসিনা বলেন, কারা কারা আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন হাত তুলে দেখান এবং ওয়াদা করুন। এসময় উপস্থিত সবাই হাত তুলে ওয়াদা করেন। শেষের দিকে মৃদু হেসে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার দেখা হবে। ‘আবার আসিব ফিরে এই সিলেটে...’।
বিকাল ৪টা ২০ মিনিট থেকে ৪টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত বক্তব্য প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক যোগাযোগ এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেসা হক, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট-৬ আসনের নৌকার প্রার্থী ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী ও অভিনেত্রী তারিন জাহানসহ সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এসময় মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন শেখ হেলাল এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ, বাহা উদ্দিন নাছিম ও মাহবুবুল আলম হানিফ প্রমুখ। জনসভা শেষে একটি ফ্লাইটে সিলেট ছাড়েন শেখ হাসিনা।
জনগনের লাল কার্ড : সেতুমন্ত্রী ওয়ায়দুল কাদের
সিলেটের নির্বাচনী সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক যোগাযোগ এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিকে বাংলার মাটিতে মানুষ চায় না। এদের প্রতিহত করতে হবে। এরা থাকলে শান্তি থাকবে না, উন্নয়ন হবে না বাংলাদেশে। জনগন তাদের লাল কার্ড দিয়েছে। গতকাল বিকালে সিলেটের ঐতিহাসিক আলিয়া মাদরাসা মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের প্রথম নির্বাচনী জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপির দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। তাদের জনগন লাল কার্ড দিয়েছেন। তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, আগুন নিয়ে খেলবেন না। নিজেদের পুড়ে মরতে হবে।
আমরা মাথা নত করি না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন
জনসভায় সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের হৃদয়ে আরেকটি জিনিস দিয়েছেন, সেটি হলো আমরা বিজয়ের জাতি, আমরা মাথা নত করি না, আমরা পারবো। এই আত্মবিশ্বাস প্রতিটি ঘরে ঘরে দিয়েছেন। এই সরকারের সঙ্গে আছি, এই জন্য আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। কোভিড ম্যানেজমেন্টে সারা সাউথ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ এক নম্বর স্থান অর্জন করেছে। এ কৃতিত্ব আমাদের প্রধানমন্ত্রীর। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে তিনি ধন্যবাদ জানান। বক্তব্যের এক পর্যায়ে নিজের জন্য ভোট ও দোয়া চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
সমাবেশ লোকারণ্য :
জনসমুদ্র বা ১০ লাখের টার্গেট পূরণ করতে পেরেছে কতোটুকু সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। ছিল অনুকূল পরিবেশ, সার্বিক মনোযোগ। এতে মোটামুটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছিল নির্বাচনী জনসভাস্থল। শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে বাস-ট্রাকে এবং পায়ে হেঁটে জনসভাস্থলে পৌঁছান। নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে যায়। তারা খণ্ড খণ্ড মিছিলে জড়ো হন আলিয়া মাঠে। এর মধ্যে দুপুর ১টায় পবিত্র কোরআন তেলোয়াতের মধ্যে শুরু হয় জনসভার কার্যক্রম। এদিকে, সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আশপাশের এলাকা, চৌহাট্টা, রিকাবীবাজারসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে নেতাকর্মীদের ভিড়। এক সময় মঞ্চ, সমাবেশস্থল ও আশপাশ এলাকায় বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, তাঁতী লীগসহ অঙ্গসংগনের নেতাকর্মীদের মিছিল আসতে দেখা যায়। এ ছাড়া সিলেটের বিভিন্ন বাগানের চা শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ জড়ো হয় সমাবেশস্থলে। এতে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে আলিয়া মাদরাসা মাঠ। এসব ছাড়াও হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ জেলার স্থানীয় নেতাকর্মীরাও দলে দলে জড়ো হন জনসভায়। সিলেট বিভাগের চার জেলায় দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের পাশাপাশি সিলেট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ও সর্বাধিক মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দল থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
সমাবেশ অংশ নেয়ার সুবিধার্থে ৪টি স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস :
সমাবেশে অংশ নিতে সিলেটের বিভিন্ন রুটে ৪টি স্পেশাল ট্রেন পরিচালনা করে বাংলাদেশে রেলওয়ে। গতকাল সিলেট রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার মো. নূরুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, যাত্রী চাহিদা বিবেচনায় রেলওয়ে সক্ষমতা অনুযায়ী বিশেষ ট্রেন সার্ভিস পরিচালনা করে। যেকেউ চাইলে ভ্রমণের জন্য (বাণিজ্যিক কার্যক্রম ব্যতীত) আবেদন করলে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস দেয়া হয়। এদিকে, বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহকারী প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (আর) মো. খলিলুর রহমান সই করা এক চিঠিতেও স্পেশাল সার্ভিসের সার্বিক বিষয়ে জাননো হয়। এতে বলা হয়েছে, শায়েস্তাগঞ্জ-সিলেট-শায়েস্তাগঞ্জ রুটে ২ জোড়া, মনতলা-সিলেট-মনতলা এবং সিলেট-বরমচাল-কুলাউড়া-সিলেট রুটে এক জোড়া করে মোট ৪ জোড়া স্পেশাল ট্রেন যাওয়া-আসা করবে। জনসভাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের অনুমোদন দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
সকালে বিমান যোগে সিলেটের মাঠিতে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী :
পূর্ব নির্ধারিত সফলসূচি অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১১ টায় সিলেটে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-৬০১ এর একটি ফ্লাইটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এরপর সোজা তিনি চলে যান হযরত শাহজালাল রহ. মাজার জেয়ারতে। জেয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসীদের দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। সাধারণ মানুষ ভোট চায়, উন্নয়ন চায়। আর তাই বিএনপি-জামায়াতের হরতাল অবরোধে তারা সাড়া দিচ্ছেন না। ইনশাল্লাহ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও জনগন ভোট দিয়ে নৌকাকে নির্বাচিত করবেন। তিনি বলেন দেশের মানুষ আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে বা রেল লাইন উপড়ে মা ও শিশুদের হত্যা বা অসহায় মানুষকে হত্যা করা, এ কেমন রাজনীতি ? বাংলার মানুষ এমন হত্যার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা নির্বাচন চায়, ভোট উৎসব চায়। ভোট জনগনের অধিকার। ভোটে বা নির্বাচনে কেউ বাধা দিলে জনগন তাদের উৎখাত করবে। অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসময় তার সাথে ছিলেন ছোটো বোন শেখ রেহানা, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নাসির উদ্দিন খান, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে চলে যান হযরত শাহ পরান রহ. মাজার জেয়ারতে। জেয়ারত শেষে প্রধানমন্ত্রী ফিরে যান সিলেট সার্কিট হাউসে। সেখানে বিশ্রাম ও মধ্যাহ্ন ভোজ শেষে বেলা ৩টা ১০ মিনিটে নগরের আলিয়া মাদরাসার মাঠের মঞ্চে উঠেন তিনি। আলিয়া মাদরাসা মাঠের মঞ্চে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী।