সারাদেশে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। পানিশূন্যতার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। যারা অসুস্থ হচ্ছেন তাদের অনেকেই বুঝতে পারছেন না আসলে তারা কী কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তবে ছোট ছোট কিছু পদক্ষেপে সহজেই এ অসুস্থতার ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। সেইসঙ্গে সম্ভব আশপাশে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া কোনো মানুষের জীবন রক্ষাও।
কীভাবে বুঝবেন আপনি ডিহাইড্রেশনে ভুগছেন?
১। ক্লান্তিবোধ করা
২। মাথাব্যথা হওয়া
৩। তৃষ্ণাবোধ
৪। মাথা ঝিম ঝিম করা
৫। দুর্বলতা অনুভব করা
৬। ঘুম ঘুম ভাব
৭। গলা শুকিয়ে যাওয়া
৮। প্রস্রাব কম হওয়া
৯। মাংসপেশির দুর্বলতা
১০। হজমে সমস্য হওয়া
এ ছাড়াও শরীরে পানির ঘাটতি থাকলে আপনার ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যাবে। ত্বকে দেখা দেবে ব্রণের সমস্যা। ডিহাইড্রেশনের আরেকটি লক্ষণ হলো মুখের দুর্গন্ধ।
পানি আমাদের মুখের ব্যাকটেরিয়াগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু আপনি পানি কম খেতে শুরু করলে এই ব্যাকটেরিয়াগুলোকে নিয়ন্ত্রণের অভাবে আপনার মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হবে।
শরীরে পানির অভাব হলে আপনি অল্পতেই ক্লান্তিবোধ করবেন। আপনার দেখা দেবে নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা। এর ফলে আপনার হঠাৎ করেই হৃদস্পন্দন এবং শ্বাস প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডিহাইড্রেশন কাটাবেন কীভাবে?
১। গ্রীষ্মের তীব্র গরমে যেহেতু শরীর থেকে পানি দ্রুত বের হয়ে যায়, তাই কিছুক্ষণ পরপর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। আপনার শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক আছে কি-না, তা বোঝার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো- প্রস্রাবের রং কেমন আছে তা দেখা। যদি প্রস্রাব হলুদাভ হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ডিহাইড্রেশনের সৃষ্টি হয়েছে।
২। প্রচুর পরিমাণে পানি সমৃদ্ধ ফল ও সবজি খান। সাইট্রাস ফ্রুট, স্ট্রবেরি, শসা, টমেটো, তরমুজ ইত্যাদি সার্ভিং ডিশে রাখুন। তাজা ফলের রসও খেতে পারেন। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, লোহা, পটাশিয়াম, খনিজ, ভিটামিন সি, বি-১ ও বি-২। তবে ফলের রস করে না ছেঁকে খেতে পারলে ভালো।
৩। গরমে আমিষজাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। তবে ডায়েটে আমিষযুক্ত খাবার থাকলে নিশ্চিত করুন দৈনিক ৩ লিটার পানি গ্রহণের।
৪। খাবারে পানিসমৃদ্ধ ফল ও সবজি রাখুন। যেমন ডাব, তরমুজ, আনারস, লেবু, শসা, টমেটো, লাউ ইত্যাদি।
৫। প্রখর রোদে বাইরে বের হলে, খেলাধুলা করলে, ব্যায়াম কিংবা শারীরিক পরিশ্রমে ২০ মিনিট পরপর পানি বা শরবত পান করুন।
৬। গরমে হাই প্রোটিন ও অ্যালকোহলপূর্ণ খাবার বাদ দিতে হবে।
৭। তৃষ্ণা মেটাতে সোডা, শর্করাজাতীয় কোমল পানীয়, আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন।
মনে রাখবেন, স্বল্প মাত্রার ডিহাইড্রেশন পানি পান করার মাধ্যমে ঠিক হয়ে গেলেও গুরুতর ডিহাইড্রেশনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
সূত্র: ওয়েবএমডি