গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার আশাপুর গ্রামে সাপের ছোবলে মৃত্যু ব্যক্তিকে জীবিত করতে ওঝার নানা আয়োজনে। জানাজা করত বাঁধা দিয়ে জীবিত করার এই প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে। এদিকে এই ঘটনা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছে শত শত লোকজন। তবে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় এ ধরনের কুসংস্কার ও গোঁড়ামি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
নিহত সাপে কাটা ব্যক্তি হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার বাসুরা এলাকার ইউনুছ আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪০)।
স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে টর্চ লাইট হাতে টেঁটা দিয়ে প্রতিবেশীদের সাথে মাছ ধরতে গেলে সাইফুলকে সাপ পায়ে ছোবল দেয়। প্রথমে ওঝার কাছে নিয়ে যায়। সেখান হতে পরে পরিবারের লোকজন রাতে তাকে পার্শ্ববর্তী টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসী বলেন, সকালে মৃত ঘোষণার পর দুপুরে জানাজা হওয়ার কথা ছিল। পরে স্বজনরা লোকমুখে শুনে সাভার থেকে ১ জন নারী ও ১ জন পুরুষ ওঝাকে নিয়ে আসে৷ তারা এসে ফাঁকা একটি জমিতে বেশ কয়েকটি কলাগাছ ও পাতিল দিয়ে বিকেল হতে বিষ নামানোর আয়োজন করছেন৷ এরপর তারা একটি ওষুধ আনতে চলে গেছে, রাতে এসে বিষ নামানোর কথা।
উপজেলার বেনুপুর এলাকার আরমান হোসেন বলেন, ‘জানাজা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ওই ওঝারা নাকি ৭ দিন আগের সাপে কাটা মানুষকেও জীবিত করতে পারে। এরপরই এই আয়োজন করা হয়েছে।’
আরেক বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই আধুনিক যুগে এসে এমন কুসংস্কার মেনে নেয়া যায়না। অবশ্যই এলাকার সচেতন মানুষ ও প্রশাসনের উচিত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’
সংবাদ কর্মী ও সাহিত্যিক ফারদিন ফেরদৌস বলেন, ‘আমাদের অজ্ঞতা আমাদেরকেই নিরন্তর হাসায়। এমন গোঁড়ামির ভয়াল বুঝা আর কতদিন আমরা বয়ে বেড়াব? কুসংস্কার দূরীকরণে আধুনিক শিক্ষা ও জনসচেতনতা জরুরি।’
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম নাসিম বলেন, ‘একজন যুবককে সাপে কেটেছে সকালেই শুনেছি। যেহেতু তার পরিবারের আত্মবিশ্বাস যদি ওঝা ভালো করতে পারে সেজন্য এ আয়োজন করেছে। উৎসুক জনতার ভিড় রয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’