JuboKantho24 Logo

ঢাকার বুকে কাবার আদলে মসজিদ

ঢাকাকে বলা হয় মসজিদের শহর। এই শহরের অলি-গলিতে রয়েছে নতুন-পুরাতন অসংখ্য মসজিদ। কিন্তু রাজধানীর ভাটারা এলাকায় অবস্থিত মসজিদ আল মোস্তফা যেন সবার থেকে আলাদা।

অনিন্দ্যসুন্দর এই মসজিদের অবস্থান রাজধানীর মাদানি এভিনিউ সড়কে। ইউনাইটেড ইউনিভার্সিটির প্রবেশমুখে মসজিদটির অবস্থান। মসজিদের একদিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, অপরদিকে ইউনাইটেড প্রকল্প।

পবিত্র কাবার আদলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। দেখলে মনে হবে মসজিদটির নির্মাণ কাঠামোতে কাবা শরিফের ছোঁয়া লেগে আছে। চোখধাঁধানো এই মসজিদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো, সামনের দিকে কালো রংয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পবিত্র কাবার আকৃতি। দেয়ালে সোনালী রং দিয়ে লেখা হয়েছে আল্লাহর নাম এবং তার প্রিয় বান্দা শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম। এর সৌন্দর্য দূর থেকেই অবলোকন করা যায়।

মসজিদের ভেতরে মিম্বরের দেয়ালের ডিজাইনও একই। ওপরের দিকে বড় করে সোনালী রং দিয়ে লেখা হয়েছে- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)।

ইউনাইটেড গ্রুপের আইকনিক এই প্রজেক্ট মসজিদ আল মোস্তফায় বেশ কিছু ভিন্নতা রয়েছে। নামাজের কাতারে বেশ কয়েকটি বেঞ্চ রাখা হয়েছে। যা অন্যকোনো মসজিদে দেখা যায় না। কেউ ক্লান্ত হলে বসতে পারেন। আবার কেউ হেলানও দিতে পারেন।

মসজিদটি রাজধানীর ১০০ ফিটে মাদানি এভিনিউয়ে ইউনাইটেড সিটিতে অবস্থিত। পাঁচতলা বিশিষ্ট এই মসজিদে আলাদা কোনো জানালা নেই। এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, যা প্রাকৃতিক আলোয় ভরপুর। দেশের অন্যকোনো মসজিদের প্রতিটি ফ্লোর থেকে ইমাম-খতিবকে দেখা যায় না। কিন্তু মসজিদ আল মোস্তফার প্রতিটি ফ্লোর থেকেই ইমাম-খতিবকে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, নারীদের জন্য রয়েছে আলাদা নামাজের জায়গা। পুরুষ-নারী মিলিয়ে একসঙ্গে প্রায় ১১ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।

নান্দনিক ডিজাইনের কারণে এটি এখন শুধুমাত্র মসজিদ নয়, পরিণত হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রে। দেশের বিভিন্ন এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন দেখতে আসেন এই মসজিদের অপরুপ সৌন্দর্য। মসজিদের চারপাশে চারটি খেজুর গাছ লাগানো হয়েছে। যার কোনোটিতে খেজুরও দেখা যায়। রয়েছে চোখজুড়ানো পানির ফোয়ারা। দর্শনার্থীরা বিমোহিত হয় এর গঠন কাঠামো আর চারপাশের সবুজেঘেরা প্রকৃতির ছোঁয়ায়।

মসজিদ আল মোস্তফায় রয়েছে দুটি চলন্ত সিড়ি। লাগানো হয়েছে চমৎকার ঝাড় বাতি। যা এখনও চালু হয়নি। চীন থেকে আনা হয়েছে মেঝেতে বিছানোর কার্পেট। লাগানো হয়েছে উন্নত মানের সাউন্ড সিস্টেম। সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনের মাধ্যমে শীতল রাখা হয় মসজিদ। আকর্ষণীয় করে তৈরি করা হয়েছে মসজিদের অজুখানা। যেখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি বেসিন। যারা গাড়ি নিয়ে নামাজে আসেন তাদের জন্য রয়েছে স্বস্তি। কারণ মসজিদের নিচে বিশাল পার্কিংয়ে ১০৫টি গাড়ি রাখা যায়। জনশ্রুতি রয়েছে, মসজিদ আল মোস্তফার নির্মাণ খরচ তিনশ’ কোটি টাকার বেশি।

সুউচ্চ বিশেষ ধরনের একটি গম্বুজ রয়েছে। যার রং সোনালী। গম্বুজ ও পাশে থাকা বিশাল উচ্চতার মিনারের কাজ এখনও শেষ হয়নি। গম্বুজ ও মিনারটি মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

রাতে যখন মসজিদের সব বাতি জ্বলে ওঠে, তখন তৈরি হয় বিমুগ্ধ এক অপার্থিব পরিবেশ। যে পরিবেশ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে সৎ পথে চলতে, সততা আর বিবেক দিয়ে নতুন জীবন গড়তে।

মসজিদটি দেখতে হলে প্রথমে আসতে হবে রাজধানীর ভাটারা থানার সামনে। তারপর অটোরিক্সায় যেতে হবে একশফিট ইউনাইটড ইউনিভার্সিটির সামনে।

Jubokantho24 Ad
এ জাতীয় আরো সংবাদ
এ জাতীয় আরো সংবাদ