
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বুধবার তিন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সাথে আলোচনা করেন এরদোয়ান।
ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সাথে সাক্ষাতে এরদোয়ান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বরাত দিয়ে তুর্কি গণমাধ্যমটি বলেছে, সাক্ষাৎকালে এরদোয়ান আশা প্রকাশ করেন যে, ইরান ও ইসরাইল সোমবার সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই উত্তেজনা গাজার মানবিক সংকটকে ছাপিয়ে যেতে দেওয়া উচিত নয়।
ফিলিস্তিনে ইসরাইলিদের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে এরদোয়ান জোর দিয়ে বলেন, তুরস্কের অগ্রাধিকার হলো- গাজায় একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং মানবিক সহায়তার নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ।
সিরিয়ার স্থিতিশীলতা, এর আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং রাজনৈতিক ঐক্য রক্ষা করার জন্য তুরস্কের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এরদোয়ান। সতর্ক করে তিনি বলেন, সিরিয়ার ওপর ইসরাইলের আক্রমণ আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করতে পারে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সিরিয়ার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি হলে দেশটির শরণার্থীদের বৃহৎ পরিসরে প্রত্যাবর্তনকে সহজতর করবে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে বেশ কয়েক লাখ শরণার্থী তুরস্কে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
এ সময় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে ন্যায়সঙ্গত এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তার দেশের প্রতিশ্রুতির ওপরও জোর দেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে তুর্কি নেতা বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে তুরস্ক সম্পর্ক বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা শিল্পে সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, বৈঠকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসার গুলার, গোয়েন্দা প্রধান ইব্রাহিম কালিন, প্রেস সেক্রেটারি ফাহরেত্তিন আলতুন, পররাষ্ট্র নীতি ও নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা আকিফ চাগাতাই কিলিক এবং একে পার্টির ডেপুটি চেয়ারম্যান হালিত ইয়েরেবাকান।
খবরে বলা হয়েছে, পরে এরদোয়ান জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে মের্জ বলেন, তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালনের জন্য এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানান।
‘আমি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে তার প্রভাব কাজে লাগিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতে অনুরোধ করেছি- যাতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বিগত সাড়ে তিন বছরের ভয়াবহ যুদ্ধ ও রক্তপাতের পর শেষ পর্যন্ত একটি সমাধানের পথে পৌঁছানো যায়,’ বলেন জার্মান চ্যান্সেলর।
খবরে আরও বলা হয়েছে, এরপর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ফরাসি নেতা ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁরর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় উভয় নেতাকে একে অপরকে সাদর সম্ভাষন জানান। তবে তাদের মধ্যে কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে প্রতিবেদনে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।