
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ২২ জুলাই ২০২৫
তুরস্কের প্রথম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল ‘টাইফুন-৪’ প্রকাশ্যে: বিশ্ব শক্তির তালিকায় নতুন এক মাইলফলক
তুরস্ক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির জগতে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিল। আজ প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে উন্মোচন করা হলো দেশটির তৈরি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল ‘টাইফুন ব্লক-৪’। এটি তুরস্কের তৈরি সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী মিসাইল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রসিদ্ধ সামরিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রকেটসান-এর তৈরি এই মিসাইলটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ মিটার এবং ওজন ৭,২০০ কেজি।
তবে এর গতি ও রেঞ্জ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য গোপন রেখেছে রকেটসান কর্তৃপক্ষ। কেবল এটুকু জানানো হয়েছে, এটি তুরস্কের সর্বোচ্চ পাল্লার এবং হাইপারসনিক গতির মিসাইল।
কি এই হাইপারসনিক গতি?
বিজ্ঞানসম্মত সংজ্ঞা অনুযায়ী, ঘন্টায় ৬,১৭৩ থেকে ১২,৩৪৮ কিলোমিটার গতির যেকোনো বস্তুকে হাইপারসনিক বলা হয়। সুতরাং, টাইফুন-৪ এর গতি ঘণ্টায় কমপক্ষে ৬,১৭৩ কিমি বলেই ধরে নেওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের গতি একটি মিসাইলকে আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে প্রায় অপ্রতিরোধ্য করে তোলে। কারণ এত দ্রুতগতির মিসাইলকে মাঝপথে থামানো বা প্রতিরোধ করা প্রায় অসম্ভব।
রেঞ্জ ও সক্ষমতা নিয়ে কৌশলগত নীরবতা
টাইফুন-৪ এর রেঞ্জ আনুমানিক ৮০০+ কিলোমিটার, তবে সূত্রমতে রেঞ্জ আরও বাড়ানো সম্ভব। এজন্য তুরস্কের আফ্রিকান উপকূলবর্তী দেশ সোমালিয়াতে লজিস্টিক সুবিধা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, তুরস্ক মূলত এখানে প্রযুক্তির মালিকানা অর্জনের মাধ্যমে একটি গেমচেঞ্জার পদক্ষেপ নিয়েছে। কারণ, হাইপারসনিক প্রযুক্তি যখন আপনার হাতে থাকে, তখন আপনি নিজের মতো করে এর গতি, ওজন, ওয়ারহেড ও পাল্লা বাড়াতে বা কমাতে পারেন।
বিশ্বে হাইপারসনিক মিসাইল প্রযুক্তি কারা রাখে?
বর্তমানে সফলভাবে হাইপারসনিক মিসাইল প্রযুক্তি ব্যবহারের তালিকায় রয়েছে—
আমেরিকা,রাশিয়া,চীন,ভারত (উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি),ইরান,এখন এই তালিকায় তুরস্কও নিজেকে স্থাপন করল, এবং সেটিও নিজের প্রযুক্তিতে। এটি শুধু দেশটির সামরিক সক্ষমতার পরিচয়ই নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক বার্তাও।
বিশ্লেষণ অনুযায়ী, টাইফুন-৪ এর সফল প্রদর্শন তুরস্ককে ভবিষ্যতের প্রতিরক্ষা কৌশলে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। তুরস্কের এই অর্জন আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা ভারসাম্যে
নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।