জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ পাওয়ার জন্য ফিলিস্তিনের আবেদনের ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হবে শুক্রবার ( ১৯ এপ্রিল )।
কূটনীতিকরা বলছেন, এটি এমন এক পদক্ষেপ যাতে ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ভোটাভুটিতে এ আবেদন পাস হলে তা কার্যকরভাবে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। খবর- রয়টার্স
কূটনীতিকরা জানান, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা তিনটার দিকে খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রস্তাবে ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে যে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হোক।
নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রস্তাবের পক্ষে কমপক্ষে ৯টি দেশের ভোট দরকার। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন এই পাঁচ দেশের কোনো একটি দেশ ভেটো দিলে প্রস্তাবটি পাস হবে না। কূটনীতিকরা মনে করছেন, ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য করার পক্ষে সমর্থন জানাতে পারে নিরাপত্তা পরিষদের ১৩ সদস্য। আর প্রস্তাবটি ঠেকাতে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য আলজেরিয়া ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার ব্যাপারে খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করে এবং বৃহস্পতিবার বিকালে ভোটাভুটির অনুরোধ জানায়। কিন্তু একই সময় মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে আরেকটি বৈঠকের সিডিউল থাকায় তা শুক্রবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সরাসরি আলোচনা হওয়া উচিত সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে, জাতিসংঘের মাধ্যমে নয়।
জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস করেই যে আমরা দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে এগুনোর মতো একটি অবস্থানে পৌঁছতে পারব তেমন আশা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
ফিলিস্তিন ২০১২ সালে জাতিসংঘে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পেয়েছে। জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার জন্য দেশটি বহু বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য তাদের আবেদন নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদিত হতে হবে। এরপর সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন লাগবে ।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ দীর্ঘদিন ধরে নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমান্তের মধ্যে পাশাপাশি বসবাসকারী ফিলিস্তিন ও ইসরাযেল রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করে। ফিলিস্তিনিরা পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকায় একটি রাষ্ট্র চায়। ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল এ অঞ্চলের অনেক ভূখণ্ড দখল করে নেয়।
১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মধ্যে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র অর্জনে সামান্য অগ্রগতি হয়েছে।