বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় খুলতে দেওয়া হবে না — হেফাজত আমীর বাবুনগরী
📍 নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, "বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় খুলতে দেওয়া হবে না।"
আজ ৫ জুলাই, শাপলা ও ২৪ জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী শহীদদের স্মরণে আয়োজিত দেশব্যাপী দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার অংশ হিসেবে, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর আয়োজিত মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে, যেখানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর সভাপতি ও হেফাজতের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন,
> “বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, যার সামাজিক, পারিবারিক ও ধর্মীয় কাঠামো ইসলামী মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। অতীতে আমরা দেখেছি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মানবাধিকারের নামে ইসলামি শরিয়াহ ও পারিবারিক আইনে হস্তক্ষেপের অপচেষ্টা চালিয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড দেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থী।”
তিনি আরও বলেন,
> “আল্লাহ মানুষকে নারী ও পুরুষ—দুই স্বতন্ত্র পরিচয়ে সৃষ্টি করেছেন। ইসলাম শুধু বৈধ বিবাহকে স্বীকৃতি দেয়, যা নারী-পুরুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সমকামিতা একটি বিকৃত ধারণা, যা সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ডেকে আনে। আমরা এসব পশ্চিমা ধ্যান-ধারণা আমাদের সমাজে ঢুকতে দেব না।”
🔹 মানবাধিকারের নামে ধর্মহীনতা চাপানো চলবে না:
হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন,
> “প্রকৃত মানবাধিকার হলো প্রতিটি মানুষকে তার স্বকীয়তা ও ধর্ম অনুযায়ী মর্যাদা দেওয়া। নারীর মর্যাদা নারী হিসেবেই রক্ষা করতে হবে। ইসলামী ব্যবস্থাই নারীর প্রকৃত অধিকার দিয়েছে—মা, স্ত্রী, মেয়ে ও বোন হিসেবে। ধর্মীয় ও সামাজিক কাঠামোতে বিদেশি সংস্কৃতির চাপানো রীতি এ দেশের জনতা কখনো গ্রহণ করবে না।”
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন,
> “জাতীয় স্বার্থ ও সাংস্কৃতিক নিরাপত্তার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপন ও বিদেশি দূত নিযুক্তির চুক্তি বাতিল করতে হবে।”
🔹 রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি:
মাওলানা মামুনুল হক বলেন,
> “বাংলাদেশের তাওহিদি জনতা দেশের স্বাধীনতা, ইসলামী মূল্যবোধ ও নৈতিকতার বিরুদ্ধে যেকোনো আগ্রাসন রুখতে প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনে রাজপথে নামা হবে।”
তিনি বলেন,
> “জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান ছিল একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত ও স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলন। এখন যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের এই শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিতে হবে, না হলে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।”
🔹 বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখতে ঐক্য দরকার:
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন,
> “দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে স্বাধীনতা ও ইসলামবিরোধী শক্তি সক্রিয় রয়েছে। তাদের রুখতে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য আরও শক্তিশালী করতে হবে। যারা শত্রুর সাথে হাত মেলায়, জনতার ঐক্য তাদের রুখে দেবে ইনশাআল্লাহ।”
🔹 উপস্থিত নেতৃবৃন্দ:
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ—মাওলানা আবদুল হামিদ পীরসাহেব মধুপুর, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মুফতি আজহারুল ইসলাম, মুফতি বশিরুল্লাহ, মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, মুফতি কামাল উদ্দিন, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মাওলানা সালাহ উদ্দিন, মাওলানা আফসার মাহমুদ প্রমুখ।