
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী-মহিপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির প্রবীণ নেতা অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগদান করেছেন। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই দরবার শরিফে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের হাতে হাত রেখে নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা করেন তিনি।
দলে যোগদানের সময় তার সঙ্গে শতাধিক অনুসারী ও দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক কে এম শরীয়াতুল্লাহ সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মোস্তাফিজুর রহমান ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া- রাঙ্গাবালী) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সাল থেকে ৯৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৮ সালে কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি ২০২৪ সাল থেকে উপজেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির ২নং সদস্য হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে বহু উত্থান পতনের দিন পার করলেও দীর্ঘদিন ধরে দলে কোণঠাসা হয়ে ছিলেন বিএনপির এ নেতা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কলাপাড়া উপজেলার শাখার সহ-সভাপতি জেড এম কাওসার বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সদস্য ফরম পূরণ করে এবং আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের হাতে হাত রেখে তিনি যোগদান করেছেন। ইসলামের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং ইসলামের পক্ষে কাজ করার লক্ষ্যে তিনি যোগদান করেছেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি বিএনপিতে নিষ্ক্রিয় ছিলাম। বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সঠিক রাজনীতি করছে। জীবনের শেষ বয়সে মানুষের জন্য কিছু করে যেতে পারি, এজন্যই আমি ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। তবে প্রার্থী হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের কাছে আমি নমিনেশন চাইবো। দল থেকে যদি আমাকে যোগ্য মনে করে, তাহলে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে নির্বাচন করবো।
সাবেক এই এমপির দল বদলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। দীর্ঘ রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয়তার অবসান, বিএনপির সঙ্গে অসন্তোষ ও কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা না পাওয়া এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণের লক্ষ্যেই ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের অভিজ্ঞতা, স্থানীয় জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতা ইসলামী আন্দোলনের জন্য বড় ধরনের লাভ হতে পারে। বিশেষ করে পটুয়াখালী-৪ আসনে ইসলামী আন্দোলনের রাজনৈতিক ভিত্তি সম্প্রসারণে এটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
এই দল বদল কি কেবল রাজনৈতিক কৌশল, নাকি আদর্শিক পরিবর্তন?—এ নিয়ে এখন সরব পুরো উপকূলীয় রাজনীতি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে অধ্যাপক মোস্তাফিজ কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।