ভারতীয় পণ্যের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাগামছাড়া শুল্ক আরোপের জেরে এক প্রকার কাঁপছে ভারতের অর্থনীতি। বুধবার সকাল ৯টা ৩১ মিনিট থেকে কার্যকর হওয়া নতুন শুল্ক নীতিতে সব মিলিয়ে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসেছে ভারতীয় রপ্তানিপণ্যের উপর। এর জেরেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদ। পথে নামছেন আমজনতা থেকে শুরু করে শ্রমিকরাও। আর শিল্পপতিরা তো বটেই, রাজনৈতিক মহলেও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে।
রাশিয়া থেকে তেল কেনা ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি এই দুই সিদ্ধান্তই ডুবিয়েছে ভারতকে এমনটিই মনে করছেন ভারতীয় বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার সস্তা তেল আমদানি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়েছিল। সেই জেরেই ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি ২৫ শতাংশ নতুন শুল্ক বসিয়েছেন ভারতীয় পণ্যের উপর। আগে থেকেই ২৫ শতাংশ শুল্ক ছিল, সব মিলিয়ে যা দাঁড়াল ৫০ শতাংশে!
এই শুল্ক-ধাক্কার ফলে সবচেয়ে বেশি ভুগবে দেশের রপ্তানিনির্ভর ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলি। আর এর জন্য বিরোধীরা দায়ী করছে মোদির ‘অদূরদর্শী’ ও ‘বুদ্ধিহীন’ সিদ্ধান্তকে। শুধু আমদানি-রপ্তানির হিসাব নয়, গোটা অর্থনীতিতেই এর প্রভাব পড়বে বলেই আশঙ্কা। বস্ত্র ও পোশাক খাতে আমেরিকা ছিল ভারতের সবচেয়ে বড় পোশাক আমদানিকারক দেশ। এখন সেই বাজার হারানোর পথে দাদাবাবুরা। এত পরিমাণ অতিরিক্ত শুল্ক দিয়ে আমেরিকায় পোশাক আমদানি করলে বেলা শেষে যে কিছুই থাকবে না ভারতীয় শিল্পপতিদের পকেটে।
এদিকে ৯৯৪ কোটি ডলারের হীরে ও অলঙ্কার শুধু আমেরিকায় রপ্তানী করতো ভারত। সুরাতে হীরার ব্যবসায় কাজ করেন লাখ লাখ মানুষ। অতিরিক্ত শুল্কের ফলে তাদের ভবিষ্যৎও এখন অন্ধকারে। ভারতের মোট চিংড়ি রপ্তানির ৫০% যায় আমেরিকায়। রপ্তানিকারকরা বলছেন, অতিরিক্ত এই শুল্কের ফলে ধ্বংশের মুখে এখন ভারতের এই চিংড়ি রপ্তানী। ভারতের রপ্তানির প্রায় ৭০ শতাংশই আসে ছোট ও মাঝারি শিল্প থেকে। তিরুপ্পুর, সুরাত, পানিপথ, মোরবি এসব অঞ্চল ভিত্তিক শিল্প এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে।
এদিকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ‘মোদি হঠাও’ আন্দোলনের ঢেউ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্ক ইস্যু ২০২৬ নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে। রাশিয়ার সঙ্গে সুবিধাবাদী তেল চুক্তি করে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করলেন মোদি। ট্রাম্পের রোষ বাড়িয়ে নিজের ‘গদি’ টিকিয়ে রাখতে পারলেন না এমনটাই বলছেন বিরোধীরা। সব মিলিয়ে এক অযোগ্য প্রধানমন্ত্রী মোদি এটি যেনো আবারও প্রমাণ করলেন তার কর্মকাণ্ডে।