‘ভোটের প্রতি মানুষের আস্থা নেই, বিশ্বাস উঠে গেছে। সারা দিন দুই-তিনটা ভোট পড়ছে। বিকালে তা বানানো হচ্ছে ৩শ থেকে ৩ হাজার। এ কারণে ভোটের ওপর মানুষের আস্থা নেই।’
মঙ্গলবার রাতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুল হাসানের (খোকন) একটি বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। কামরুল হাসান এক সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহসম্পাদকও ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঠাকুরগাঁও পৌরসভা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য।
ওই বক্তব্যে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘সারা দিন দু-চারটা লোক ভোট দিতে যায়। সারা দিনে ভোট পড়ে আড়াই শ থেকে তিন শ। কিন্তু বিকেল বেলা গণনার পর তা হয়ে যায় তিন হাজার ১৬৬।’
কেন্দ্রে সারা দিন সাংবাদিক-গণমাধ্যমকর্মী, রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভিন্ন প্রার্থীর পুলিং এজেন্টরা থাকছে। তারাই দেখছেন সারা দিনে একটি কেন্দ্রে ভোট পড়ছে ৩০০। আর বিকাল হলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৩০০ থেকে তা বাড়িয়ে করছেন ৩ হাজার। তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি, এর জন্য আমরাই দায়ী। হামরা (আমরা) এমনভাবে রাজনীতি করছি যে, এখানে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ থাকবে না। অথচ একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ থাকবে, বিএনপিসহ সব দল থাকবে। আমরা স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি।
ছাত্রলীগ নেতা আরও বলেন, রাজনীতিকরা রাজনীতিকে নষ্ট করে এটাকে ব্যবসায় পরিণত করেছে। আমরা চালাকি, ধান্ধাবাজি আর চালবাজি করে ভোটটা করছি। এ কারণে মানুষের ভোটের প্রতি আস্থা নেই। ভোট দিতে মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায় না।
তার এ বক্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে কামরুল হাসান বলেন, ‘ভোটের প্রতি মানুষের আস্থা কমে গেছে, আমি আওয়ামী লীগ করি বলে এটা তো অস্বীকার করতে পারি না। কেন্দ্রে ভোটার কেন আসছেন না, বিভিন্ন পথসভায় তা তুলে ধরে ভোটারের ক্ষোভ কমিয়ে এনে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করতেই এমন বক্তব্য দিয়েছি। এ বক্তব্য অন্যভাবে দেখার সুযোগ নেই।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইন্দ্রনাথ রায় বলেন, আমরা তার লাগাম টেনে ধরতে পারি না। তবে তিনি বলেন, এখানে ভোটকে কেন্দ্র করে মন্দির ও মসজিদভিত্তিক রাজনীতি শুরু হয়েছে।