ইফতারে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গণ-ইফতার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রথমে বাধা দিয়ে পরে অংশ নেয় ছাত্রলীগ।
জানা গেছে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ইফতার পার্টির ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গণ-ইফতার কর্মসূচির ঘোষণা দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে এ কর্মসূচির আহ্বায়ক পরিচয় দিয়ে সকলকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান জায়েদ হাসান জোহা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মনি ফেরদৌস, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবসহ বিভিন্ন বিভাগের কয়েকশো শিক্ষার্থী অংশ নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, কর্মসূচি পালনে শিক্ষার্থীরা আসরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে জড় হতে থাকেন। প্রথমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পালনে বাধা দেন এবং আয়োজক জোহাকে কয়েকদফা আলাদা ডেকে কথা বলেন ও ফোনের মেজেঞ্জারসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাই করেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু কিছু না পেয়ে পরে নেতাকর্মীদের নিয়ে গণ-ইফতার অংশ নেন তারা। তবে ইফতার শেষে ফের জোহাকে আলাদা নিয়ে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন ছাত্রলীগের নেতারা। নামাজ পড়তে যেতে চাইলেও আগে তার সঙ্গে কথা বলতে চাপ দেন তারা। এতে বাধা দিলে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায় ছাত্রলীগ। তবে জোহাকে জিজ্ঞেসাবাদে বাধ্য করা হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জিম্মায় ছেড়ে দেন এই শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, 'এদিনে শিবিরের সাবেক নেতা নোমানীর মৃত্যুবার্ষিকী। আমাদের কাছে তথ্য ছিল শিবির নামে-বেনামে ক্যাম্পাসে একটা কর্মসূচি পালন করবে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আমরা গণ–ইফতার নামে একটি আয়োজন দেখতে পাই। বিষয়টি প্রশাসন ও ক্রিয়াশীল কোনো সংগঠন জানে না। ফলে ক্যাম্পাসে যাতে বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য আমরা সেখানে অবস্থান নেই। তাছাড়া শিবির সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে আয়োজকের ফোন যাচাই করা হয়। তবে তার সংশ্লিষ্টতা পাইনি।'
শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় এ ব্যাপারে জায়েদ হাসান জোহার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, গণ-ইফতারে অংশ নিতে জোহা দাওয়াত দেয়। পরে জানতে পারি, কিছু ছেলে ইফতারে বাধা দিচ্ছে। তখন সেখানে যাই। ইফতার শেষে ছাত্রলীগের ছেলেরা জোহাকে সঙ্গে নিতে জোরজবরদস্তি করতে থাকে। এতে সে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তার নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি তাকে মেসে পৌঁছে দিতে চাই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা জোহাকে জোর করে নিয়ে যায়।
এর আগে, গত ১১ মার্চ শাবিপ্রবির ও নোবিপ্রবি প্রশাসন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ইফতার পার্টিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।