আজ (১১ সেপ্টেম্বর'২৪, বুধবার) বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে দোয়া ও নৈরাজ্যবাদ বিরোধী পথসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, বাহাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী মৌল নীতিমালার আলোকে একটি গণঅভিপ্রায়ের বিরুদ্ধাবাদী সংবিধান বাংলাদেশের মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। যে সংবিধান বিগত অর্ধ শতাব্দীকাল বাংলাদেশের মানুষকে তাদের চিন্তা চেতনা তাদের হাজার বছরের কৃষ্টি কালচারের বিরুদ্ধে চালিত করেছে। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমরা বলতে চাই, পাঁচই আগস্টের বিপ্লবকেও আগামীদিনে বিভ্রান্ত করার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র পরিচালিত হবে। এইজন্য এদেশের ছাত্রসমাজকে সচেতন থাকতে হবে। এদেশের আলেম সমাজকে সোচ্চার থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার রাজনীতির ছিল দুটি মূলনীতি। প্রথম মূলনীতি ছিল, প্রতিশোধের রাজনীতি। দ্বিতীয় মূলনীতি ছিল বিভাজনের রাজনীতি। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার বাকশাল গঠনের কারণে যখন একটি অভ্যুত্থানের শিকার হন। তখন এক আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শেখ হাসিনা বলেছিল, যে জাতি তার বাবাকে হত্যা করেছে। তিনি সেই জাতির কাছে থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের পাঁচই আগস্ট পর্যন্ত পঞ্চাশ বছর শেখ হাসিনা রাজনীতি করেছে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করার জন্য। এদেশের মানুষকে কিভাবে দাবায়া রাখা যায়। এদেশের মানুষকে কিভাবে ছোট করা যায়। এদেশকে কিভাবে অন্য ভিনদেশী আরেকটি রাষ্ট্রের গোলামে পরিণত করে রাখা যায়। এটাই ছিল শেখ হাসিনার রাজনীতির মূল কথা।
তিনি আরো বলেন, প্রতিশোধ গ্রহণ করার জন্য শেখ হাসিনার মূল পলিসি ছিল ডিভাইড এন্ড রোল। বৃটিশদের কুখ্যাত নীতি ভাগ করো আর শাসন করো। এই নীতিতে পরিচালিত হয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে দেয়নি। বাংলাদেশের মানুষকে দুইটা পক্ষে ভাগ করে সবসময় একটি সংঘাত বাঁধিয়ে রেখেছে। এভাবেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশটাকে শোষণ করেছে।
পূজার সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজার সময় ঘনিয়ে আসছে। সেই উপলক্ষে মুসলিম কমিউনিটি বিশেষ করে ইমাম সাহেবগণ, আলেম সমাজ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সকল নেতাকর্মীরা, খেলাফত মজলিসের সকল নেতাকর্মীরা, ইসলামী সকল সংগঠনের নেতাকর্মীরা আপনারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে সজাগ এবং চৌকান্না থাকবেন।
জেলা আহ্বায়ক মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ হাসান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা মাহবুবুল হক, মাওলানা শরাফত হুসাইন, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মাওলানা নূর হোসাইন নূরানী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি পরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মোল্লা মুহাম্মাদ খালিদ সাইফুল্লাহসহ প্রমুখ।