মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০৭:২২ অপরাহ্ন
মুহাম্মাদ রাকীবুল ইসলাম
দ্বীন ইসলামকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে এবং প্রতিষ্ঠিত করতে বিভিন্ন ভাবে মেহনত চলছে। একেকজন একেক মাধ্যমে মেহনত করছেন। কেউ মেহনত করছেন তালীমের লাইনে, কেউবা করছেন দাওয়াতের লাইনে, আবার কেউ করছেন তাগলীবের লাইনে। এভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে দ্বীন ইসলামের মেহনত চলমান থাকা সত্বেও বদ্বীন আজ আমাদের ঘাড়ে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছে। সর্বদিকেই বদ্বীনের জয়জয়কার। দ্বীন ইসলাম আল্লাহ তায়ালার নিকট একমাত্র মনোনীত ধর্ম বা জীবন বিধান হওয়া সত্তেও আমরা কুফরি মতবাদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করছি। আমরা কেমন যেন তাদের হুকুমের গোলাম বনে গেছি। এর অন্যতম কারন হল যে আমরা কাজ করি মূল্যায়নের আশায়। আমি কাজ করার আগে থেকেই চিন্তা করি যে আমাকে এখানে কতটুকু মূল্যায়ন করা হবে? আর এখনতো মূল্যায়নের পদ্ধতিই আমরা পরিবর্তন করে ফেলেছি। আমরা এখন মনে করি মূল্যায়নের মানে হল আমাকে নেতৃত্বের আসনে বসিয়ে দিবে। আর আমরাতো এখন নেতৃত্বকে দায়িত্ব মনে করছি না। পদ বা গদি মনে করছি। এজন্যই আমারা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছি। আরো আশ্চর্যের বিষয় হল যে আমরা এমন অনেকে আছি যারা নেতৃত্ব বা পদের আকাঙ্ক্ষী হয়ে কাজ করি। নেতৃত্ব বা পদের জন্য এখন গ্রুপিং, লবিং এবং তদবির পর্যন্ত হয়। অথচ হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেতৃত্ব চেয়ে নিতে স্পষ্ট নিষেধ করেছেন। যখনই আমার মানসা অনুযায়ী কোন পদ না দেওয়া হয় তখনই আমার মুখটা কালো হয়ে যায়। এবং আমি রাগে ক্ষোভে ফুঁসতে থাকি। দ্বীনের কাজ করার ক্ষেত্রে আমার যদি হয় এ অবস্থা, তাহলে আমার খুলুসিয়াত ও লিল্লাহিয়াতের কি অবস্থা তা না হয় নাই বললাম। অথচ আমাদের সামনে আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ সা. সাহাবায়ে কেরাম রা. ও আকাবিরদের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাঁরা দ্বীনের জন্য কিভাবে নিঃস্বার্থভাবে মূল্যায়নের মানসিকতা পরিহার করে দ্বীনের স্বার্থে লিল্লাহিয়াত ও খুলুসিয়াতের সাথে কাজ করেছেন। এবং শাশ্বত এ জীবন বিধান ইসলামকে বিশ্ব ব্যাপি ছড়িয়ে দিয়েছেন। এবং জীবন বিধান হিসাবে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাগলীবে দ্বীনের মেহনতটা অন্তত যদি আমরা নিঃস্বার্থ ভাবে মূল্যায়নের মানসিকতা পরিহার করে অথবা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির চিন্তা বাদ দিয়ে করতে না পারি তাহলে সামনে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। তাই আসুন আমরা মূল্যায়নের পচা চিন্তা বাদ দিয়ে নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করি।