মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
যুবকণ্ঠ ডেস্ক;
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির তীব্রতা কমতে থাকায় বাংলাদেশি নাগরিকদের বৈদেশিক কর্মসংস্থানের হার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির এক বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। সংসদীয় কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনা প্রকোপের তীব্রতার মাঝে গত বছরের জুলাইয়ে মাত্র ১৬ জনের বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছিল। এর পর থেকে ক্রমে তা বাড়তে থাকে। গত বছরের ডিসেম্বরে বিদেশে কর্মী পাঠানো হয়েছিল ২৮ হাজার ৩৯৮ জন। আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৬ হাজার ৭৩২ জনের বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৫৫২ জনে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস হচ্ছে বৈদেশিক কর্মসংস্থান। তবে করোনা মহামারির কারণে এ খাতে ব্যাপক বিপর্যয় নেমে আসে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে প্রবাসীরা সব মিলিয়ে ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় এসেছিল ১ হাজার ২৪৯ কোটি ডলার।
এ প্রসঙ্গে বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের কল্যাণে নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য রাইটস অফ বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট (ওয়ারবি)-এর পরিচালক জাসিয়া খাতুন রেডিও তেহরানকে বলেন, করোনার কারণে অনেক প্রবাসীকে চাকরি হারিয়ে বা বেতন না পেয়ে খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে। এখন উঁচু হারে ঋণ নিয়ে তারা ধার-দেনার ফাঁদে আটকে যাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, সরকার এদের জন্য যথেষ্ট আন্তরিকতা দেখালেও কাজের ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা রয়েছে।
বিদেশ ফেরত বাংলাদেশিদের ওপর পরিচালিত আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা‘র (আইওএম) এক সাম্প্রতিক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার প্রভাবে বিদেশ থেকে ফেরত আসা প্রবাসীরা দেশে কর্মস্থান খুঁজে নিচ্ছে ধীরে ধীরে। তবে এখনও তারা অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পুরোনো ঋণ শোধ করতে গিয়ে নতুন করে দেনায় জড়াচ্ছেন ফেরত আসা প্রবাসীরা।
গতকাল সংসদীয় কিমিটির বৈঠকে জানানো হয়, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিদেশ ফেরত কর্মীদের এবং প্রবাসে করোনায় মৃত কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিনিয়োগ ঋণ (বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ) প্রদানের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
বিদেশ ফেরত কর্মীদের অর্থনৈতিক পুনর্বাসনের জন্য সরকার থেকে ৫০০ কোটি টাকাসহ মোট ৭০০ কোটি টাকার ঋণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ঋণসংক্রান্ত একটি নীতিমালার আলোকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৩১২ জনকে ৯০ কোটি ২৫ লাখ টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে।