বৃহস্পতিবার, ৩০ Jun ২০২২, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন
দেশে হাজার হাজার কওমি মাদ্রাসা গড়ে উঠেছে। তারা শিক্ষাক্ষেত্রে বড় ধরনের অবদান রেখে যাচ্ছেন। কিন্তু একটি বিষয় আশঙ্কার। আর সেটা হলো, মাদ্রাসা ছাত্রদের এতদিন যেভাবে লালন-পালন করেছেন, বোর্ডিং চালিয়েছেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে অনেকের পক্ষেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বোর্ডিং চালানো কষ্ট হয়ে যাবে। ছাত্রদের আশ্রয় দেওয়া, তাদের স্বল্পমূল্যে ৩বেলা আহার যোগানো, শিক্ষকদের বেতন দেওয়া ইত্যাদি কাজ দিন দিন জটিল হয়ে যাবে।
তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে যে সকল মাদ্রাসা গ্রামে-গঞ্জে রয়েছে, যে সকল মাদ্রাসার নিজস্ব সম্পদ আছে, তারা দ্রুত কৃষির দিকে মনযোগ দিন। ব্যাপক আকারে পণ্য উৎপাদনে মনোযোগি হউন। কিছু লেখাপড়ার ক্ষতি হলেও বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপ থেকে রক্ষা পাবেন। অনেক মাদ্রাসায় প্রচুর জায়গা আছে। সেগুলো এতদিন খালি পড়ে ছিলো। আর খালি ফেলে রাখবেন না। সুযোগ থাকলে গ্রামে -গঞ্জে প্রতিটি মাদ্রাসার পাশের জমি কিনে ফেলুন। চর এলাকায় জমি কিনুন। পরিত্যক্ত জমি, নালা, ডোবা কিনে ফেলুন। মাছের চাষ করুন। ছাত্রদেরকে কাজে লাগান। পরনির্ভরশীলতা দূর করতে এতে লজ্জার কিছু নেই। যারা বোর্ডিং এ ফ্রি খায়, তাদেরকে কাজে লাগান। অহমিকা ঝেড়ে ফেলুন। মাদ্রাসাগুলো অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়লে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কেউ আপনাদের পাশে এগিয়ে আসবে না। স্যোসাল মিডিয়া, ইউটিউব ব্যাপক পরিমাণে আলেম বিদ্বেষী মনোভাব গড়ে তুলছে। সাধারণ মানুষ নানাকারণে আলেমদের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে উঠছেন। এসব অদেখা আক্রোশ থেকে বাঁচতে ধীরে ধীরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হতে চেষ্টা করুন। শুধু লেখাপড়াটাই জীবনে মুখ্য উদ্দেশ্য নয়।
মানুষের মতো মানুষ করতে স্বনির্ভরতাও খুব জরুরী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এর পরোক্ষপ্রভাব কওমী মাদ্রাসাগুলোতেও পড়বে। কৃষিই হলো আসল কাজ। কৃষ্টিতে স্বনির্ভরতা আপনাকে পরোক্ষভাবে এমন সাপোর্ট দিবে যা ভাবতেও পারছে না। শাক-সবজি, মাছ, গাছ, যেখানে যেটা পারা যায় চাষাবাদে উদ্যমি হোন। ছাত্রদের উদ্যমি করুন। কিছু কিছু দুর্বল ছাত্র আছে তাদের হাতে নিজেদের তত্তাবধানে কাঁচি ও কোদাল তুলে দিন। মাদ্রাসার কোনো কাজ যেন শ্রমিক নিয়ে করতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। মাদ্রাসাগুলোতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, স্বজনপ্রীতি, অযোগ্যদের পদায়ন, তোষামোদি মার্কা কমিটি ইত্যাদি থেকে সতর্কতার সাথে বের হয়ে আসুন।
আমাদের মধ্যে কৃত্রিমতার রোগ ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। লোক দেখানো কর্মসূচী, খতমে বোখারীর নামে বাড়াবাড়ি,, সঙ্গীতের আসর, কিরাতের রাজকীয় মাহফিল ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন। বাড়তি আলোকসজ্জা থেকে সরে আসুন। মুহতামিম সাহেবগণ বে-হিসাবি আয়েশি জীবন যাপন থেকে দূরে থাকুন। আল্লাহর ওয়াস্তে বাস্তব জগতে ফিরে আসুন।