শনিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৩, ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন
কওমি শিক্ষার আদর্শ বুকে লালন করে আরো বৃহত্তর পরিসরে উম্মাহর খেদমতে নিয়োজিত হতে চাওয়াদের বিশেষ সুযোগ দিচ্ছে ইউনিভার্সিটি অফ স্কলার্স। এখন থেকে কওমি শিক্ষাধারায় দাওরায়ে হাদীস সমাপ্তকারীগণ আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়ার সার্টিফিকেট দিয়ে এই ইউনিভার্সিটি থেকে MBA ও EMBA করতে পারবেন। সংশ্লিষ্টগণ বলছেন, এতে কওমি শিক্ষার্থীদের দেশীয় ভার্সিটিগুলোতে উচ্চশিক্ষার দুয়ার উন্মুক্ত হলো।
এই সুযোগ তৈরী করার পেছনের মূল উদ্যোক্তা আইএফএ কন্সাল্টেন্সির প্রতিষ্ঠিতা পরিচালক এবং জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের সহকারী মুফতি আব্দুল্লাহ আল মাসুম এবং এথিস গ্রুপ মালয়েশিয়ার হেড অফ শারিয়াহ এন্ড গভর্নেন্স এবং আইএফএ কন্সাল্টেন্সির কো-ফাউন্ডার মুফতি ইউসুফ সুলতান। ইসলামিক ফাইন্যান্সের উপর মাস্টার্স প্রোগ্রামের পরিকল্পনা নিয়ে মূলত ইউনিভার্সিটি অফ স্কলার্সের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের আলাপ শুরু।
মুফতি আব্দুল্লাহ আল মাসুম ফাতেহকে বলেন, ইলমে দ্বীন শিখে সমাজে বহুমুখী খেদমত করার স্বপ্ন অনেকেরই। কিন্তু উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে হারিয়ে যেতে হয়। অনেকেই ইলমে দ্বীনের পাশাপাশি দ্বীনী খেদমতের বিস্তৃত অঙ্গনে কাজ করার নিমিত্তে জাগতিক নানা শিক্ষায় পারদর্শী হতে চান। তাদের জন্য চিন্তা করেই মূলত ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করি। এই ভার্সিটি অন্য কর্তৃপক্ষের হাতে ছিল। বর্তমান কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আমরা প্রস্তাবনা পেশ করলাম, ইসলামিক ফাইন্যান্সের উপর মাস্টার্স প্রোগ্রাম করা যায়। তাতে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কওমি শিক্ষার্থীদের। দেশে আর কোনো ভার্সিটিতে ইসলামিক ফাইন্যান্সের উপর মাস্টার্স প্রোগ্রাম নেই। কর্তৃপক্ষ রাজি হয়।’
কোর্স পরিকল্পনা নিয়ে মুফতি আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, আমি এবং বন্ধুর ইউসুফ সুলতান চেয়েছিলাম ইসলামিক ফাইন্যান্সের উপরই কোর্স হোক। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বললেন, নতুন কোর্স চালু করতে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অনুমোদন এবং বিভিন্ন ডকুমেন্টস সাবমিট করতে হয়। এটা লং প্রসেস। ডকুমেন্টস সব সাবমিট ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। তবে অনুমোদন হয়ে আসার আগে রেগুলার এমবিএ কোর্সেই কওমি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নেয়া হবে। অনুমোদন পেয়ে গেলে নির্দিষ্ট কোর্সেই ভর্তি করানো হবে।
কথা হয় ইউনিভার্সিটি অফ স্কলার্সের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর আতিফ ওয়াফিকের সঙ্গে। কোন কোন কোর্সে কওমি শিক্ষার্থীরা বর্তমানে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে জানতে চাইলে ফাতেহকে তিনি জানান, আলিম পাশ স্টুডেন্ট,যাদের সাইন্স সাবজেক্ট আছে, তারা যে কোন ইঞ্জিনিয়ারিং CSE/EEE/TE প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারবে। আর সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকলে BBA, English প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারবে। ফাজিল, কামিল অথবা দাওরায়ে হাদিস পাশ স্টুডেন্ট MBA প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারবে।
ইউজিসির তালিকায় ৮৩ নম্বরে আছে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের নাম। কওমি শিক্ষার্থীদের সুযোগ দেয়ায় ইউজিসি থেকে কোনো আপত্তির মুখে পড়তে হবে কিনা জানতে চাইলে আতিফ ওয়াফিক বলেন, ‘কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।’ তিনি জানান, এখানে ভর্তি হতে কোনো পরীক্ষা দেয়া লাগবে না। এমবিএ কোর্স সমাপ্ত করতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মতো খরচ হবে।
উল্লেখ্য, এখানে তিন ধরনের এমবিএ আছে। ১. এমবিএ রেগুলার। ২. জব হোল্ডারদের জন্য ইএমবিএ। ৩. বিবিএ হোল্ডারদের জন্য এমবিএ।