বৃহস্পতিবার, ০৮ Jun ২০২৩, ০১:১৬ পূর্বাহ্ন
ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক ও ইসলামবিদ্বেষী লেখক সালমান রুশদির ওপর নিউ ইয়র্কে হামলা হয়েছে। আমেরিকার নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে এক মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার সময় তাঁর ওপর এ হামলা হয়।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার শাটাকোয়া ইনস্টিটিউটে বক্তৃতা করতে গিয়েছিলেন বুকারজয়ী এই লেখক। তাকে যখন পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখনই এক লোক দৌড়ে মঞ্চে উঠে ছুরি নিয়ে ৭৫ বছর বয়সী রুশদির ওপর হামলা চালায়। ছুরিকাঘাতের ফলে তার ঘাড়ে ক্ষত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে তার আঘাত কতটা গুরুতর, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘটনার পরপরই রুশদিকে সহায়তা করতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজন মঞ্চে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন হামলাকারীকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.), হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও পবিত্র কুরআনের অবমাননার উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ (শয়তানের পদাবলী) লেখা অপরাধে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা ইমাম খোমেনী (র.) ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মুরতাদ সালমান রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া দিয়েছিলেন। ইরানের একটি সংস্থা রুশদির মাথার জন্য অন্তত: ২৫ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে এবং পরে এই পুরস্কারের অর্থের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে (৩৩ লাখ ডলার)। ইরানের অন্যান্য সংস্থাও রুশদিকে হত্যার জন্য পৃথকভাবে পুরস্কার ঘোষণা করে।
ইহুদিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর আর্থিক সহায়তাপুষ্ট ধর্মত্যাগী ও অত্যন্ত কুরুচির অধিকারী মুরতাদ সালমান রুশদির লেখা ‘স্যাটানিক ভার্সেস নামক জঘন্য বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর পরই ভারত ও পাকিস্তানের মুসলমানরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদীদের ওপর পুলিশি হামলায় কয়েকজন মুসলমান শাহাদত বরণ করেন। পরে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে নিন্দা ও বিক্ষোভ। আমেরিকা ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশ এবং শহরের মুসলমানরা ইসলাম অবমাননার বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। কিন্তু বাক-স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে পাশ্চাত্য রুশদির প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখে। এ অবস্থায় ইরানে ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ও ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেনী (র.) রুশদির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ঐতিহাসিক ফতোয়া দেন। তার এই ফতোয়া বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের আনন্দিত করে। ইসলামী সম্মেলন সংস্থা বা ওআইসিও ইমাম খোমেনী (র.)’র ফতোয়ার প্রতি সমর্থন জানায়।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী রুশদির বিরুদ্ধে ইমাম খোমেনীর ফতোয়াকে অপরিবর্তনযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ইমামের এই ফতোয়া পবিত্র কুরআনের নির্দেশের আলোকে দেয়া হয়েছে। পবিত্র কুরআনের বিধান যেমন পরিবর্তন বা বাতিল করা যায় না তেমনি এই ফতোয়াও বাতিল বা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।