বৃহস্পতিবার, ০৮ Jun ২০২৩, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিন ওয়েলস স্বীকার করেছেন, আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে পাশ্চাত্যের সামরিক উপস্থিতি সত্বেও ওই দেশটিতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে সন্ত্রাসী হামলার পর মার্কিন সরকার সন্ত্রাসবাদ দমনের অজুহাতে বিশ্বের বহু দেশে রাজনৈতিক ও সামরিক হস্তক্ষেপ শুরু করে। আল কায়দা সন্ত্রাসীদের দমন এবং তালেবান সরকারের পতন ঘটানোর জন্য আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে দেশটি দখল করে নেয় মার্কিন নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের সেনারা। ২০০১ সাল থেকে মার্কিন সেনারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের কথা বলে আফগানিস্তানে ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখে। কিন্তু ২০ বছর পর বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করে।
পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ মার্কিন সেনাদের আফগানিস্তান ত্যাগের ঘটনা বেশ হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল। বিশেষ করে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরপরই তালেবান ক্ষমতা দখল করায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। মার্কিন সরকার গত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, নারী ও শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওই দেশটির অবস্থান শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে যাতে আফগানিস্তানে তারা আরো দীর্ঘ মেয়াদে সেনা উপস্থিতি বজায় রাখতে পারে। কিন্তু মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর এটা প্রমাণিত হয় যে এসব প্রতিশ্রুতি ছিল সম্পূর্ণ ভুয়া।
এমনকি মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি সত্বেও আফগানিস্তানে মাদক চাষ ও উৎপাদন বেড়ে যাওয়া থেকে বোঝা যায়, ২০০১ সালের তুলনায় সেখানে মাদক উৎপাদনের পরিমাণ ১৭ থেকে ৪০ শতাংশ পরিমাণে বেড়েছে। আফগানিস্তানের বীর বলে খ্যাত আহমেদ শাহ মাসুদের ভাই আহমাদ ওয়ালি মাসুদ এ ব্যাপারে বলেছেন, গত ২০ বছরে মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানের উন্নয়নে কোনো কাজই করেনি এবং তাদের সমস্ত প্রতিশ্রুতি ছিল লোক দেখানো।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিনীরা যদিও আফগানিস্তানের ব্যাপারে তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছেন কিন্তু গত এক বছরে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি, তালেবানের ক্ষমতা দখল, নারীদের ব্যাপারে তালেবানের নীতির বাস্তবায়ন প্রভৃতি থেকে ওই দেশে মার্কিন ব্যর্থতার বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শুধু আমেরিকা নয় বরং তাদের মিত্ররাও এখন আফগানিস্তানে তাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করছেন। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী যেমনটি বলেছেন, যে কারণে আমরা যুদ্ধ করেছি আমাদের সেনারা জীবন দিয়েছে তার কিছুই অর্জিত হয়নি।