বৃহস্পতিবার, ০৮ Jun ২০২৩, ১২:০২ পূর্বাহ্ন
সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর পিলারের সঙ্গে ধাক্কায় একটি বালুবোঝাই বাল্কহেড ডুবে গেছে। তবে বাল্কহেডে থাকা পাঁচ শ্রমিক সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সেতুর ১০ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদিকে এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর আরেকটি বাল্কহেড সেতুর ৯ নম্বর পিলারে ধাক্কা লাগে। আজ রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বাল্কহেডটি সেখানেই আটকে আছে।
পুলিশ ও বাল্কহেডের শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, ডুবে যাওয়া বাল্কহেডটি সিরাজগঞ্জ থেকে বালু নিয়ে নারায়ণগঞ্জে ও আটকে থাকা বাল্কহেডটি সিরাজগঞ্জ থেকে বালু নিয়ে ফরিদপুর সিঅ্যান্ডবি ঘাটের দিকে যাচ্ছিল।
ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের শ্রমিক আক্তার হোসেন বলেন, সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর ঘাট এলাকায় একটি বালুমহাল থেকে বালুভর্তি বাল্কহেডটি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন তাঁরা। তবে নদীতে অতিরিক্ত স্রোতের কারণে পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁদের বাল্কহেডটি ডুবে যায়। পরে তাঁরা বাল্কহেডে থাকা পাঁচজন সাঁতরে বেলকুচির রান্ধুনীবাড়ী চরে উঠতে সক্ষম হন।
বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর প্রকৌশলী ফারুক হোসেন বলেন, মঙ্গলবার বেলা পৌনে একটার দিকে নদীর প্রবল স্রোতের কারণে বাল্কহেডটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড়ের ১০ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে এবং সেখানেই ডুবে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ৯ নম্বর পিলারের সঙ্গে আরেকটি বালুবোঝাই বাল্কহেড ধাক্কা দিয়ে সেখানে আটকে যায়। বাল্কহেডটি সেখানেই আটকে আছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুরের দিকে আমরা জানতে পারি, সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা লেগে বালুবোঝাই একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নৌ পুলিশকে জানিয়েছি। এর ঘণ্টাখানেক পর টহলরত পুলিশ দল জানায়, ৯ নম্বর পিলারের সঙ্গে বালুবোঝাই আরেকটি বাল্কহেড ধাক্কা দিয়ে আটকে আছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই। প্রচণ্ড স্রোতে পিলারের সঙ্গে বাল্কহেডটি আটকে আছে।’
আটকে থাকা বাল্কহেডটি উদ্ধারের ব্যাপারে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু সেতু সাইড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, বালুবোঝাই বাল্কহেড আটকে থাকার খবর পেয়ে তখনই সেতুর নিরাপত্তাকর্মীদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে যমুনা নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি সেতু কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানানো হবে। তবে ডুবে যাওয়া বা দুর্ঘটনাকবলিত কোনো নৌপরিবহন উদ্ধারের জন্য এখানে কোনো উদ্ধারকারী নৌযান নেই। এ বিষয়েও সেতু কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানানো হবে।
এর আগে গত রোববার দুপুরে একই স্থানে বঙ্গবন্ধু সেতুর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বালুবোঝাই একটি বাল্কহেড ডুবে যায়। এ ঘটনায় আবুল শিকদার (৪৫) নামের এক শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। এ ঘটনায় কবির ও খলিলুর রহমান নামের দুজন সাঁতরে কূলে ওঠেন। নিখোঁজ ওই শ্রমিককে এখনো উদ্ধার করা যায়নি।
দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে আহসান মাসুদ বলেন, ‘সেতুর নিচ দিয়ে কোনো নৌপরিবহন চলাচলের নিষেধাজ্ঞা নেই। এ কারণে আমরা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন দুর্ঘটনায় সেতুর কোনো ক্ষতি হবে কি না, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সেতু কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হবে।’