বৃহস্পতিবার, ০৮ Jun ২০২৩, ১২:১০ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :

ঘরই হলো মুসলিম নারীদের শিক্ষা ও গবেষণার উত্তম জায়গা: সৈয়দ শামসুল হুদা

ঘরই হলো মুসলিম নারীদের শিক্ষা ও গবেষণার উত্তম জায়গা

মুসলিম নারীদের ঘরে বসে জ্ঞান-চর্চার জন্য পবিত্র কুরআন সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। সুরা আহযাবের ৩৪নং আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে :

وَاذْكُرْنَ مَا يُتْلَى فِي بُيُوتِكُنَّ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ وَالْحِكْمَةِ إِنَّ اللَّهَ كَانَ لَطِيفًا خَبِيرًا (34)

আয়াতটি মুসলিম নারীদের জন্য একটি বাস্তবভিত্তিক কর্মনির্দেশনা। মুসলিম নারীরা ঘরে থাকবে, কিন্তু তারা সেখানে কী করবে? সেখানে অলস সময় কাটাবে? গল্প-গুজব, পরনিন্দা ইত্যাদির চর্চা করবে? না, মুসলিম নারীদের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট কর্মনীতিও ঘোষণা করা হয়েছে। আর তা হলো, “তোমাদের ঘরে মহান আল্লাহর আয়াত সমূহের যে চর্চা হয়, তা থেকে উদ্ভব প্রজ্ঞার যে আলোচনা হয়, সেগুলো খুব গভীর মনযোগের সাথে অনুধাবন করবে। গবেষণা করবে। প্রজ্ঞার প্রচার ও প্রসার করবে।’

অর্থাৎ ঘরোয়া পরিবেশে মুসলিম নারীরা জ্ঞানের গবেষণা করবে। এতে বুঝা যায় যে, মুসলিম পরিবারে আল্লাহ আয়াতের জ্ঞান সাধনা চর্চা হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়াতি দর্শন থেকে যা চর্চা করেন, যা বলেন, তার সবকিছু উম্মাহাতুল মুমিনীনগণ সংরক্ষণ করবেন। আর এটা সত্য যে, মহানবী সা. এর ঘরের অনেক এমন ইলম যা তাঁর প্রিয় পত্নীগণ সংরক্ষণ না করলে, উম্মাতের কাছে প্রকাশ না করলে মুসলিম পরিবারগুলোর অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অজানা থেকে যেতো।

এ আয়াতের হুকুম চিরকালের জন্য। সকল মুসলিম পরিবারেই এমন চর্চা হওয়া উচিত। ঘরে নারীদের নিয়ে দীনের চর্চা করা, আলোচনা করা, তাদেরকে ইসলামী জ্ঞানে পারদর্শী হিসেবে গড়ে তোলা, সকল পুরুষদের ওপর অবশ্য কর্তব্য। দীন শুধু পুরুষরা চর্চা করবে, শিখবে বিষয়টি এমন নয়। নারীরাও শিখবে। তারাও চর্চা করবে। এ জন্যই ইতিহাসে হাজারো নারী মুহাদ্দিসার খবর আমরা পাই। ভারতের বিখ্যাত লেখক, মাওলানা আকরাম নদভী দামাত বারাকাতুহুম সম্প্রতি ‘মুহাদ্দিসাত’ নামে ৪৩খন্ডের এক বিশাল বই লিখেছেন। যা প্রমাণ করে অতীতের মুসলিম পরিবারগুলোতে কী পরিমাণ ইলমের চর্চা হতো।

আমাদের অতীতের প্রতিটি ঘর ছিল এক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি ঘর থেকে হাদীস চর্চাকারিণী বের হতো। তারা কুরআন ও হাদীসের চর্চা করতো। আমাদের ঘর গুলো হয়ে গেছে কুরআন ও হাদীসের চর্চাশুন্য। ফলে জাহিলিয়াত আমাদের নারীদের সামনে সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে।

আয়াতটি আল্লাহ তাআলা এই বলে শেষ করেছেন যে, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা অতিশয় সুক্ষদর্শী ও সকল বিষয়ে সম্যক অবহিত। কারা মহান আল্লাহ এই নির্দেশ মেনে ঘরে ঘরে দীনিশিক্ষা চর্চার পরিবেশ গড়ে তুলে, কারা উপেক্ষা করে, কারা বদ-দীনিকে ঘরের মধ্যে চর্চার পরিবেশের ভিতর নিয়ে আসে, সে সম্পর্কে তিনি সবিশেষ অবহিত।

আসুন, আমাদের নারীদেরকে গৃহাভ্যান্তরে কুরআন ও হাদীস চর্চার পরিবেশ গড়ে তুলি। মুমিনের প্রতিটি বাড়ি হোক এক একটি গবেষণাগার, এক একটি বিজ্ঞানাগার। আয়াতটি আরো প্রমাণ করে যে, মহান আল্লাহ তাআলা নারীদেরকে মুর্খ রাখতে চান না। ইসলাম শুধু পরপুরুষের সাথে অবাধ মেলা-মেশাকে নিষেধ করেছে, জ্ঞানের চর্চা করতে নিষেধ করে নাই। বরং কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে যে, ঘরে যা জ্ঞানের চর্চা হয় তা ভালো করে স্মরণ রাখো। সংরক্ষণ করো।

11.12.2022

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

All rights reserved © Jubokantho24.com