শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০২:২৪ অপরাহ্ন
পাবলিক পরীক্ষায় কোনো শিক্ষার্থীকে পাশ করাতে না পারা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। এমপিওভুক্ত হলে সেগুলোর সরকারি বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নন-এমপিও প্রতিষ্ঠান হলেও শোকজসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু এবার ভিন্ন পন্থা বেছে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সব প্রতিষ্ঠানের কাছে সমস্যা জানতে চাওয়া হবে। এরপর সেগুলোর মান উন্নয়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ‘শূন্যপাশ’ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ‘কারণ’ জানতে শিক্ষা বোর্ডগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত অফিস আদেশে বলা হয়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডগুলো ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কোনো শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়নি, অর্থাৎ পাশের হার শূন্য, সেসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা ৩ কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হবে।
এবার কারিগরি ও মাদ্রাসাসহ ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ৫০টি কলেজ ও মাদ্রাসায় একজন পরীক্ষার্থীও পাশ করেনি। এর আগে গত বছরের শেষের দিকে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ২০২২ সালের ওই পরীক্ষায়ও ৫০ স্কুল ও মাদ্রাসায় কোনো শিক্ষার্থী পাশ করেনি। এসব প্রতিষ্ঠানেরও মান উন্নয়নের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে গত ২৯ জানুয়ারি সব শিক্ষা বোর্ডকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমস্যা ও সম্ভাবনা অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে অধিদপ্তরের মাধ্যমে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে গত ৩০ জানুয়ারি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ বলেছিলেন, সাধারণত পাবলিক পরীক্ষায় কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে যদি একজন শিক্ষার্থীও পাশ করতে পারে সেটাকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। এ কারণে শাস্তি হিসাবে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়। এমপিও প্রতিষ্ঠান হলে তা বাতিল করা হয়। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী চাচ্ছেন, এবার প্রতিষ্ঠানগুলোর সমস্যা জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে লক্ষ্যে তিনি সারসংক্ষেপ চেয়েছেন। বোর্ডগুলো তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে সরাসরি কথাও বলবেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি এইচএসসির ফল প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও শিক্ষামন্ত্রী উল্লিখিত কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রয়োজনে ভালো কলেজ বা স্কুলের অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
এবার এইচএসসি ও সমমানে যে ৫০টি প্রতিষ্ঠানে শূন্যপাশ সেগুলোর মধ্যে ৬টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন ৪৪টি কলেজ আছে। সবচেয়ে বেশি ফেল করা কলেজ ১৩টি দিনাজপুর বোর্ডে। মাদ্রাসা ৪টি আর কারিগরি কলেজ আছে ২টি। ঢাকা বোর্ডে ৮টি, রাজশাহীতে ৯টি, কুমিল্লায় ৫টি, যশোরে ৬টি এবং ময়মনসিংহে ৩টি কলেজ আছে। অন্যদিকে এসএসসিতে শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করা ৫০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১টিই মাদ্রাসা। বাকিগুলো স্কুল।