রবিবার, ০৪ Jun ২০২৩, ০৪:০৯ অপরাহ্ন

শিরোনাম :

পুলিশের উপস্থিতিতে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে হত্যা করা হয় মুসলিম বিধায়ককে

ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ও আলোচিত মুসলিম রাজনীতিবিদ আতিক আহমেদ ও তাঁর ভাই আশরাফ আহমেদকে গুলি করে হত্যার সময় হত্যাকারীরা ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “তারা মোট সাতটি গুলি চালিয়েছে, অথচ পুলিশ কিছুই করেনি।”

অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকদের বলেন, “বন্দুকধারীরা পুলিশের গাড়িতে করে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ও তাদের হাতে সাংবাদিকের পরিচয়পত্র ছিল।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আতিক ও তার ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যার পর ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে শোনা যায়।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩ জন হত্যাকারীদের গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন লাভলেশ তিওয়ারি (২২), অরুণ মৌর্য (১৮) ও সানি সিং (২৩)।

হত্যাকাণ্ডের পূর্বে খুনিরা সাংবাদিক পরিচয়ে পুলিশের সহযোগিতায় আতিক আহমেদ ও আশরাফের কাছে সাক্ষাতকার নিতে আসে। এসময় তাদের হাতে মাইক্রোফোন ছিল।

ভারতীয় গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজন অপরাধ স্বীকার করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, অপরাধ জগতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল তারা।

তাদের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও ঘটনা স্থল থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশের তথ্য মতে, অভিযুক্তরা আতিক আহমেদের দলকে নির্মূল করে নিজেদের একটি পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। এজন্য তারা আতিক ও আশরাফ পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়েই হত্যার পরিকল্পনা সাজায়। উদ্দেশ্য সফল করতে তারা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয়ে জাহির করে। আর সুযোগমতো এ দুজনকে হত্যা করে। তবে পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালাতে পারেনি।

অভিযুক্ত লাভলেশ তিওয়ারির ফেসবুক প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, তিনি উগ্র হিন্দুত্ববাদী বজরং দলের জেলা পর্যায়ের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।

এ হত্যাকাণ্ডে আরেক অভিযুক্ত সানি সিং এর বিরুদ্ধে ভারতের হামিরপুর জেলায় ১৭টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও নারীদের উত্ত্যক্ত করার অপরাধে তিনি জেলও খেটেছেন।

অন্যদিকে এ ঘটনাটিকে ‘ঠান্ডা মাথায় খুন’ বলে অভিহিত করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমীন দলের নেতা ও ভারতের সংসদ সদস্য আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি।

এ ঘটনার সময় নিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের ভারতীয় সংবিধানের ৩১১ ধারার অধীনে চাকরি থেকে বরখাস্ত করারও দাবী জানান তিনি। পাশাপাশি উত্তর প্রদেশের চিফ মিনিস্টার যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, “উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যে আইনের শাসন না থাকলেও বন্দুকের শাসন চলছে।”

আতিক আহমেদকে ”গ্যাংস্টার” হিসেবে উপস্থাপন করে আসছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো। আতিক আহমেদকে হত্যার আগে তার ছেলে আসাদকে কথিত এনকাউন্টার হত্যা করে উত্তর প্রদেশ পুলিশ।

সূত্র: মুসলিম মিরর

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

All rights reserved © Jubokantho24.com