মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাস উদ্যাপনের জন্য উৎসবের আলোয় সেজে উঠেছে জার্মান শহর ফ্রাঙ্কফুর্ট। “শুভ রমজান” লেখা একটি বড় সাইনবোর্ড জ্বলজ্বল করছে শহরের কেন্দ্রস্থলে, রেস্তোরাঁ থেকে ক্যাফে সেজে উঠেছে আলোকমালায়। গত রবিবার সন্ধে থেকেই অর্ধচন্দ্র এবং তারা ইত্যাদি নানা আকৃতির আলো, লন্ঠন দিয়ে সাজানো হয়েছে জার্মানির অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই শহর। বড়দিনের উৎসবে জার্মানির ছোট-বড় সব শহরে আলোকসজ্জার বিষয়টি নতুন নয়। তবে রমজানে এই প্রথম জার্মানিতে আলোকসজ্জা করা হল! মেয়র নার্গেস এসকান্দারি-গ্রুয়েনবার্গ এটিকে শহরের মানুষের সুন্দর অভিব্যক্তি বলে অভিহিত করেছেন যা “ফ্রাঙ্কফুর্টের সকল মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের চিহ্ন বহন করে।” সঙ্কট এবং যুদ্ধের সময়ে, এই আলো সব মানুষের জন্য আশার চিহ্ন এবং আমাদের বৈচিত্র্যময় শহুরে সমাজে সংহতি জোরদার করে।” বলে জানিয়েছেন মেয়র। পশ্চিমের শহর ফ্রাঙ্কফুর্ট ৭ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের বসবাস। জার্মানির আর্থিক কেন্দ্রে প্রায় ১০০,০০০ মুসলমানের বাসস্থান।রমজানের আলোর জন্য শহরটিতে কমপক্ষে ৭৫,০০০ ইউরো খরচ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।রমজানের রাস্তার সজ্জাও প্রথমবারের মতো কোলোন শহরে প্রদর্শন করা হয়েছিল।
যদিও বিল্ড সংবাদপত্র জানিয়েছে সেগুলি সরকারি তহবিলের পরিবর্তে ব্যক্তিগত অনুদান দ্বারা অর্থায়ন করা হয়েছিল। মুসলিমদের সমন্বয়কারী কাউন্সিলের ফ্রাঙ্কফুর্ট শাখা শহরের এই আলোকসজ্জাকে” সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বৈচিত্র্যের স্বীকৃতি” হিসাবে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু সব প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক ছিল না। হেসের একজন আঞ্চলিক আইন প্রণেতা রবার্ট ল্যামব্রু, যার অতি-ডানপন্থী এএফডি পার্টি জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে, রমজানের সাজসজ্জাকে ‘ইসলামের কাছে আত্মসমর্পণ’ হিসাবে সমালোচনা করেছেন।
চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সিটি কাউন্সিলর ওমর শেহাতা এই আলোকসজ্জার ধারণাটি পোষণ করেছিলেন। শহরের রাস্তায় সন্ধ্যার পরে এই আলোকসজ্জা দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন। তাঁরা দল বেঁধে ওই আলোর নিচে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলছেন। পুরো রমজান মাস জুড়ে এই আলোকসজ্জা থাকবে জার্মানিতে। সমস্ত সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে সিটি কাউন্সিলর ওমর শেহাতা বলছেন-” ফ্রাঙ্কফুর্টের অনেক মানুষ ডানপন্থি চরমপন্থা, ইহুদি-বিদ্বেষ এবং মুসলিম-বিরোধী বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘।
সূত্র : আরব নিউজ