
মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বে আলেমদের প্রতিনিধিদলের পর এবার একটি বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল আফগানিস্তান সফরে যাচ্ছেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিনিধি দলটি আফগানিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। এ দিকে আলেমদের প্রতিনিধিদলটি ইতোমধ্যে সেখানে সফরকালে আফগানিস্তানের মন্ত্রী, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ধর্মীয় ও একাডেমিক প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজের নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর তারা আফগানিস্তানের ইসলামী আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওলাওয়ী আমির খান মুত্তাকির সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাৎ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনটি মূল বিষয়ে আলোচনা হয়। এগুলো হলো- বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা সম্প্রসারণ এবং দুই দেশের ওলামা ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি বাংলাদেশের আলেম প্রতিনিধি দলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং আফগান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনায় তিনি উল্লেখ করেন, আফগানিস্তানে তুলা, কার্পেট, শুকনো ফলমূল এবং মার্বেলের মতো খাতে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ থেকে একটি ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল কাবুলে সফরে আসবে। তিনি বলেন, একবার আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক চ্যানেল চালু হলে, বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ থেকে আগ্রহ দেখে আমরা উৎসাহিত এবং পারস্পরিক সুবিধার ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার বিপুল সম্ভাবনা দেখছি।
কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনায় মন্ত্রী জানান, আফগানিস্তান এ অঞ্চলের প্রায় সব দেশের সাথেই আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে, কিন্তু বাংলাদেশ এখনো সেই উদ্যোগ নেয়নি। তিনি প্রতিনিধিদলের ওলামায়ে কেরামদের অনুরোধ করেন দেশে ফিরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য। প্রতিনিধিদল এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানায় এবং সক্রিয়ভাবে তা এগিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
বাংলাদেশী প্রতিনিধিরা আফগান সরকারের আন্তরিক আতিথেয়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আশাবাদ জানান যে এ সফর দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত ও ফলপ্রসূ সংলাপের একটি নতুন পথ খুলে দেবে।
জানা যায়, আলেম প্রতিনিধিদল গত ১৭ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তান সফরে যান। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন প্রসপার আফগানিস্তান এ সফরের অন্যতম আয়োজক। এ সফর একটি তথ্য-সংগ্রহ ও সৌজন্যমূলক এবং ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রসহ দুই দেশের মধ্যে আরো গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলার সম্ভাবনা অন্বেষণ করছে।
সফরে থাকা মাওলানা আব্দুল হামিদ, পীর সাহেব মধুপুর বলেন, এ সফর একটি নতুন সূচনার প্রতিক। আমি দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তান কিভাবে পুনর্গঠিত হচ্ছে তা নিজ চোখে দেখতে চেয়েছিলাম এবং আলহামদুলিল্লাহ তা সরাসরি দেখার সুযোগ পেয়েছি। বহু দিনের ইচ্ছা ছিল মাওলাওয়ী মুত্তাকি সাহেবের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করার এবং এবার সে সৌভাগ্য হয়েছে।