আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

আজ ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিনটি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যময়, কেননা এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেন মানবজাতির শ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন।

৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আরবের মক্কা নগরীতে কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন মহানবী (সা.)। জন্মের আগেই তিনি পিতৃহীন হন এবং মাত্র ছয় বছর বয়সে মাতাকে হারান। ৬৩ বছর বয়সে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ১২ রবিউল আউয়ালেই তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নেন।

দিনটি উপলক্ষে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কুরআন তিলাওয়াত, দরুদ শরিফ পাঠ, নফল রোজা, দান-খয়রাত এবং নফল ইবাদতের মাধ্যমে দিনটি পালন করছেন। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-কে কেন্দ্র করে দেশে বিরাজ করছে এক বিশেষ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য।

দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় ছুটি পালিত হচ্ছে। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সশস্ত্র বাহিনীর সব দপ্তরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কালিমা তায়্যিবা সংবলিত ব্যানার টানানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, “মহানবী (সা.) সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পথপ্রদর্শক ছিলেন। তাঁর জীবনাদর্শ সকল মুসলমানের জন্য অনুসরণীয়।”

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এই মহান দিনে আমাদের প্রার্থনা—মহানবী (সা.)-এর আদর্শ যেন আমাদের জীবনে প্রতিফলিত হয় এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর ঐক্য সুসংহত হয়।”

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে বলেন, “মহানবী (সা.) মানবজাতির মুক্তির দূত। তাঁর শিক্ষা ও ত্যাগের আদর্শ আমাদের জীবনে ধারণ করতে হবে।”

পবিত্র দিবসটি উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

শুক্রবার বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে শুরু হয় এই আয়োজন।

এতে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বাদ মাগরিব ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দেশের খ্যাতনামা আলেম-ওলামা বয়ান করবেন।

১৩ সেপ্টেম্বর থেকে বায়তুল মোকাররমে মাসব্যাপী ইসলামি বইমেলা শুরু হবে। এতে মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তান ও লেবাননের প্রকাশনা সংস্থাসহ প্রায় ২০০টি স্টল অংশ নেবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।

১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আগারগাঁও কার্যালয়ে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ সেপ্টেম্বর বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে।

১১ সেপ্টেম্বর কিরাত মাহফিল, ১৭ সেপ্টেম্বর হামদ-নাত এবং ১৮ সেপ্টেম্বর বাদ আসর স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর অনুষ্ঠিত হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৬টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ওয়াজ মাহফিল, দোয়া মাহফিল এবং সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

পবিত্র দিনটি শান্তিপূর্ণভাবে পালনে সরকার বিস্তৃত নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়েছে। বিশেষ করে বড় মসজিদ ও ধর্মীয় স্থানে কঠোর নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীর মতো শহরগুলোতে শোভাযাত্রা ও জমায়েতের জন্য বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাও গৃহীত হয়েছে।

Jubokantho24 Ad
এ জাতীয় আরো সংবাদ
এ জাতীয় আরো সংবাদ
সর্বশেষ
সর্বশেষ