JuboKantho24 Logo

চোখের আলো ছাড়াই কুরআনের হাফেজ ইমতিয়াজ

মায়ের মুখ থেকে পড়া শুনে মুখস্থ করে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৬১ পেয়েছে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল। রোববার (১২ মে) দুপুরে ফল প্রকাশের পর ইমতিয়াজুলের পাস করার খবরে মা-বাবাসহ বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও খুশি।

মায়ের সহযোগিতায় বাসায় চলে ইমতিয়াজুল ইসলামের নিয়মিত পড়াশোনা, ইচ্ছে ছিল কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হবে, সে জন্য বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল বিজ্ঞান বিভাগে, তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় নানা ধরনের অসুবিধায় বিজ্ঞান বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে চলে যায় ইমতিয়াজুল ইসলাম। পরে একজন শ্রুতিলেখক দিয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৪.৬১ পেয়েছে।

জানা যায়, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল ইসলাম বান্দরবান পৌর এলাকার বাসিন্দা খায়রুল বশরের ছেলে। মা-বাবা আর দুই ভাইয়ের সঙ্গে পৌরসভার স্টাফদের জন্য নির্মিত ডরমেটরির একটি ছোট ঘরে বসবাস করেন সে।

১১ মাস বয়সে হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতায় নিজের দুটি চোখ হারিয়েছিল ইমতিয়াজুল। তবে চোখ হারালেও মনের দিব্য চোখ দিয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অর্জন করেছে জিপিএ ৪.৬১ পয়েন্ট।

ঢাকা ০২ জুন ২০২৪সকাল ০৯:০৪:৫১

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
চোখের আলো ছাড়াই কুরআনের হাফেজ ইমতিয়াজ

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : ০১ জুন, ২০২৪, ১১:৫১ রাত

সংগৃহীত ছবি

মায়ের মুখ থেকে পড়া শুনে মুখস্থ করে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৬১ পেয়েছে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল। রোববার (১২ মে) দুপুরে ফল প্রকাশের পর ইমতিয়াজুলের পাস করার খবরে মা-বাবাসহ বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও খুশি।

মায়ের সহযোগিতায় বাসায় চলে ইমতিয়াজুল ইসলামের নিয়মিত পড়াশোনা, ইচ্ছে ছিল কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হবে, সে জন্য বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল বিজ্ঞান বিভাগে, তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় নানা ধরনের অসুবিধায় বিজ্ঞান বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে চলে যায় ইমতিয়াজুল ইসলাম। পরে একজন শ্রুতিলেখক দিয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৪.৬১ পেয়েছে।

জানা যায়, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল ইসলাম বান্দরবান পৌর এলাকার বাসিন্দা খায়রুল বশরের ছেলে। মা-বাবা আর দুই ভাইয়ের সঙ্গে পৌরসভার স্টাফদের জন্য নির্মিত ডরমেটরির একটি ছোট ঘরে বসবাস করেন সে।

১১ মাস বয়সে হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতায় নিজের দুটি চোখ হারিয়েছিল ইমতিয়াজুল। তবে চোখ হারালেও মনের দিব্য চোখ দিয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অর্জন করেছে জিপিএ ৪.৬১ পয়েন্ট।

দরিদ্র বাবা-মার সংসারে নানা প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল ইসলাম নিজেকে ভবিষ্যতে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে দেশের সেবা করতে চায়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও অদম্য সাহস আর মেধা সম্পন্ন ইমতিয়াজুলকে নিয়ে তার মা-বাবার ছিল উচ্চ আকাঙ্ক্ষা। আর তাই ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিনিয়ত শ্রম দিচ্ছেন তারা।

ইমতিয়াজুল ইসলামের বাবা খায়রুল বশর জানান, ইমতিয়াজুল বয়স যখন ১১ মাস ছিল তখন হঠাৎ করে তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ছেলেকে সুস্থ করতে দেশের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারে দ্বারে গেছেন। কয়েকবার অপারেশন করেও তার চোখ ভালো করা যায়নি।

ইমতিয়াজুল ইসলামের মা রোজি আক্তারবলেন, আমার ছেলে ইমতিয়াজুল লেখাপড়ায় অত্যন্ত মেধাবী, চোখে দেখতে না পেলেও সে মনের চোখ দিয়ে সব দেখে। আর সে ঘরের অনেক কাজ করার পাশাপাশি কম্পিউটার পরিচালনা করতে পারে দ্রুত। সন্তানের এমন অসহায়ত্ব দেখে কষ্ট লাগলেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় তার ভালো রেজাল্ট আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে আশার সঞ্চার জুগিয়েছে।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমি পবিত্র কুরআন শরীফে ৩০ পারা মুখস্থ করেছি। পাশাপাশি নিজেকে দেশের বোঝা হিসেবে না রেখে চেয়েছি উচ্চ শিক্ষা নিতে। তবে চোখ নষ্ট হওয়ায় আমাকে বান্দরবানে কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি পর্যন্ত হতে দেয়া হয়নি। পরে আমার মায়ের অনুরোধে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় আমাকে বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে সুযোগ দেয়। আর আমি আমার প্রচেষ্টায় এবারের এসএসসি পাস করেছি এবং সামনে আরও এগিয়ে যাবো উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্য নিয়ে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
চোখের আলো ছাড়াই কুরআনের হাফেজ ইমতিয়াজ

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : ০১ জুন, ২০২৪, ১১:৫১ রাত

সংগৃহীত ছবি

মায়ের মুখ থেকে পড়া শুনে মুখস্থ করে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৬১ পেয়েছে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল। রোববার (১২ মে) দুপুরে ফল প্রকাশের পর ইমতিয়াজুলের পাস করার খবরে মা-বাবাসহ বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও খুশি।

মায়ের সহযোগিতায় বাসায় চলে ইমতিয়াজুল ইসলামের নিয়মিত পড়াশোনা, ইচ্ছে ছিল কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হবে, সে জন্য বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল বিজ্ঞান বিভাগে, তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় নানা ধরনের অসুবিধায় বিজ্ঞান বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে চলে যায় ইমতিয়াজুল ইসলাম। পরে একজন শ্রুতিলেখক দিয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৪.৬১ পেয়েছে।

জানা যায়, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল ইসলাম বান্দরবান পৌর এলাকার বাসিন্দা খায়রুল বশরের ছেলে। মা-বাবা আর দুই ভাইয়ের সঙ্গে পৌরসভার স্টাফদের জন্য নির্মিত ডরমেটরির একটি ছোট ঘরে বসবাস করেন সে।

১১ মাস বয়সে হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতায় নিজের দুটি চোখ হারিয়েছিল ইমতিয়াজুল। তবে চোখ হারালেও মনের দিব্য চোখ দিয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অর্জন করেছে জিপিএ ৪.৬১ পয়েন্ট।

দরিদ্র বাবা-মার সংসারে নানা প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল ইসলাম নিজেকে ভবিষ্যতে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে দেশের সেবা করতে চায়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও অদম্য সাহস আর মেধা সম্পন্ন ইমতিয়াজুলকে নিয়ে তার মা-বাবার ছিল উচ্চ আকাঙ্ক্ষা। আর তাই ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিনিয়ত শ্রম দিচ্ছেন তারা।

ইমতিয়াজুল ইসলামের বাবা খায়রুল বশর জানান, ইমতিয়াজুল বয়স যখন ১১ মাস ছিল তখন হঠাৎ করে তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ছেলেকে সুস্থ করতে দেশের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারে দ্বারে গেছেন। কয়েকবার অপারেশন করেও তার চোখ ভালো করা যায়নি।

ইমতিয়াজুল ইসলামের মা রোজি আক্তারবলেন, আমার ছেলে ইমতিয়াজুল লেখাপড়ায় অত্যন্ত মেধাবী, চোখে দেখতে না পেলেও সে মনের চোখ দিয়ে সব দেখে। আর সে ঘরের অনেক কাজ করার পাশাপাশি কম্পিউটার পরিচালনা করতে পারে দ্রুত। সন্তানের এমন অসহায়ত্ব দেখে কষ্ট লাগলেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় তার ভালো রেজাল্ট আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে আশার সঞ্চার জুগিয়েছে।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ইমতিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমি পবিত্র কুরআন শরীফে ৩০ পারা মুখস্থ করেছি। পাশাপাশি নিজেকে দেশের বোঝা হিসেবে না রেখে চেয়েছি উচ্চ শিক্ষা নিতে। তবে চোখ নষ্ট হওয়ায় আমাকে বান্দরবানে কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি পর্যন্ত হতে দেয়া হয়নি। পরে আমার মায়ের অনুরোধে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় আমাকে বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে সুযোগ দেয়। আর আমি আমার প্রচেষ্টায় এবারের এসএসসি পাস করেছি এবং সামনে আরও এগিয়ে যাবো উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্য নিয়ে।

আগামীতে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে দেশের সেবা করতে এবং প্রতিষ্ঠিত হতে বিত্তবানদের সহায়তার পাশাপাশি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের আরও সরকারি সহযোগিতা বাড়াতে আহ্বান জানান ইমতিয়াজুল ইসলাম।

বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সম্পদ কুমার বড়ুয়া বলেন, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও ইমতিয়াজুল ইসলাম অনেক জ্ঞানী। সে সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসা এবং পড়ালেখার প্রতি খুবই মনোযোগী ছিল।

তিনি আরও বলেন, এই ধরনের শিক্ষার্থীদের যদি সঠিকভাবে মনিটরিং করা যায় তবে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। সমাজের বিত্তবানদের এই ধরনের উদ্যমী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পাশে থাকার আহ্বান জানাই।

Jubokantho24 Ad
এ জাতীয় আরো সংবাদ
এ জাতীয় আরো সংবাদ